বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১

ঢাকায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও লা ভিঞ্চি হোটেলে আগুন

আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৯ মে ২০২৪, ০০:০০
শনিবার পুরান ঢাকার ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা -ফোকাস বাংলা

ঢাকার ধোলাইখাল মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে ও কারওয়ান বাজার লা ভিঞ্চি হোটেলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন লাগার পর ভবন দুটিসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থানাধীন ধোলাইখালের ২৫ নম্বর জোড়পুল লেনের একটি ছয় তলা বাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া বেরুতে থাকে। অনর্গল ধোঁয়া বেরুনোর এক পর্যায়ে ভবনের ভেতরে আগুন দেখা যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন আগুন আগুন বলে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়।

ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার যায়যায়দিনকে বলেন, বেলা পৌনে ১১টার অনেকটা আগেই ফায়ার সার্ভিসের সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তাতে তেমন সুবিধা না হওয়ায় আরও ফায়ারের ইউনিট জনবল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরে সিদ্দিক বাজারে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অফিস থেকে আরও ৩টি

ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। ৫টি ইউনিট আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। দুপুর ১২টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপন করা সম্ভব হয়।

তিনি আরও জানান, ৬ তলা ভবনটির দ্বিতীয় তলায় ব্যাংকটির ধোলাইখাল শাখা অবস্থিত। ব্যাংকটিতেই আগুন লেগেছিল। ব্যাংকটির শাখাটি প্রায় ৩ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গায় অবস্থিত। আগুনে ব্যাংকের অনেক আসবাবপত্র ছাড়াও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ক্ষতি হয়েছে। তবে ব্যাংকের কোনো টাকা বা লকারে কোনো স্বর্ণালঙ্কার বা মূল্যমান কোন দলিল দস্তাবেজ ছিল কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। পরে ব্যাংকের লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে সব কিছু বুঝে নেন। অগ্নিকান্ডের ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদু্যতিক গোলযোগ থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। শনিবার হওয়ায় ব্যাংকটি বন্ধ ছিল। আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঢাকার কারওয়ান বাজার লা ভিঞ্চি হোটেলের জেনারেটর রুমে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। জেনারেটরের রুমটি হোটেলের পাশে একটি টিনশেড ঘরের নিচে। ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, বেলা ১১টার দিকে আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করা সম্ভব হয়। আগুন নিভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট কাজ করেছে। জেনারেটর রুমটি হোটেল থেকে খানিকটা দূরে আলাদা জায়গায় অবস্থিত। এজন্য আগুন হোটেলের মূল ভবন পর্যন্ত যেতে পারেনি। তবে আগুন লাগার কারণে হোটেলে থাকা লোকজনসহ ভবনটির আশপাশের মানুষের রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ১০টার দিকে হোটেলটি থেকে প্রথমে আগুন লাগার চিৎকার ভেসে আসে। সময় যত বাড়ছিল চিৎকার চেঁচামেচিও তত বাড়ছিল। এক পর্যায়ে হোটেলটি ছাড়াও আশপাশের ভবন থেকে মানুষ দৌড়ে নিচে নেমে আসতে থাকেন। এমন ঘটনায় আশপাশের মানুষ রীতিমতো হতবাক। পরে হোটেলের জেনারেটর রুমে আগুন লাগা এবং বিকট শব্দ করার বিষয়টি আতঙ্কিত লোকজনরা জানান।

\হহোটেলটির আশপাশের লোকজনরা জানান, আতঙ্কিতদের মধ্যে আলোচনার বিষয় বস্তু ছিল বেইলী রোডে হোটেলে আগুন পুড়ে ৪৬ জনের মৃতু্যর বিষয়টি। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৯ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৪৬ জনের মৃতু্য হয়। এরপর থেকেই কোনো হোটেলে বা বাসা বাড়িতে আগুন লাগলেই হোটেল বা বাসা বাড়িসহ আশপাশে থাকা মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক কাজ করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে