আজকের যায়যায়দিন

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে? সব ওয়েবসাইটে আছে আপনার জানার বিষয়, আপনি ভেতরে ঢুকবেন কেন?'

শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এক সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব ভবনের নিচতলায় অভ্যর্থনা বিভাগে রাখা রেজিস্ট্রার বইয়ে পরিচয় লিখে সই করে বিশেষ 'পাস' নিয়ে ভেতরে যেতে পারতেন সংবাদকর্মীরা। তবে গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গভর্নরের নির্দেশে এই পাস ইসু্য করা বন্ধ রয়েছে।

সাংবাদিকরা কোন কোন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন সেটিও নজরদারি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ সাংবাদিকদের। চার ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালকসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অলিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলতে।

এর প্রতিবাদে ৮ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ বর্জন করেন সাংবাদিকরা। নিষেধাজ্ঞা না তুললে সম্প্রতি আন্দোলনের ঘোষণা এসেছে তাদের পক্ষ থেকে।

বিষয়টি নিয়ে শনিবার সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে পৃথিবীর কোন দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকে অবাধে সাংবাদিকরা ঢুকতে পারে সেই প্রশ্ন রাখেন ওবায়দুল কাদের।

দেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ১৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসায় সরকার উদ্বিগ্ন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কে বলল আপনাকে ১৩ বিলিয়ন ডলার?'

নিউজে বলছে- সাংবাদিকদের

এমন উত্তরে তিনি বলেন, 'কোন নিউজে বলছে আপনাকে? আমাদের কাছে হিসাব আছে।'

তখন সাংবাদিকরা বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরই বলেছেন- ব্যবহার করার মতো ১৩ বিলিয়ন ডলার আছে।'

জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তাহলে গভর্নরকে জিজ্ঞেস করুন যে কি কারণে এইটা এই পর্যায়ে আসল। আমরা জানি ১৯ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার, এর মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।'

এ পর্যায়ে সাংবাদিকরা বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে দেওয়া হয় না, তাহলে গভর্নরকে জিজ্ঞেস করব কীভাবে।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে? কোন দেশে? ভারতের ফেডারেল ব্যাংকে কি অবাধে ঢুকতে পারছে কেউ? কেন ঢুকবে? সব ওয়েবসাইটে আছে, আপনার যা জানবার বিষয়। আপনি ভিতরে ঢুকবেন কেন?'

রিজার্ভ কমে ১৩ বিলিয়নে নেমে আসায় অর্থনীতিবিদরা অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এ কথা জানানোর পর ওবায়দুল কাদের বলেন, 'কয় বিলিয়ন ডলার নিয়ে আমরা স্বাধীনতার পর যাত্রা শুরু করেছি? ডলার ছিল আমাদের? বিএনপি কয় বিলিয়ন ডলার রেখে গেছে আমাদের? তিন বিলিয়ন পস্নাস। তাহলে এখন ১৯-২০ বিলিয়ন ডলার আছে এটা কি কম নাকি? এখন আমাদের রপ্তানি আয় বাড়ছে, রেমিট্যান্সও বাড়ছে এই মুহূর্তের যে প্রবণতা। এইগুলো বাড়লে রিজার্ভও বাড়বে।'

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'আমরা একটা কথা কেউ বলি না, আজকের বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ কেন হয়েছে? সরকারের ধারাবাহিকতায় এবং স্থায়িত্বের কারণে। এর কারণেই বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ কারণে বিশ্বের বিস্ময়ে রূপান্তরিত হতে পেরেছে।'

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি আপনজন এই দেশের জনগণ। হতাশাকবলিত বাংলাদেশে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।'

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন।