রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১
ঢাকা-পদ্মা সেতু-কাশিয়ানি-যশোর রুট

ট্রেন চলাচলে পাল্টে যাবে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনমান

মো. নিজামুল আলম, কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ)
  ১৮ মে ২০২৪, ০০:০০
ট্রেন চলাচলে পাল্টে যাবে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনমান

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বহুল আকাঙ্ক্ষিত ঢাকা-পদ্মা সেতু-কাশিয়ানি-যশোর রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে আগামী জুন মাসে। যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত এ রুটে রেললাইন নির্মাণের শতভাগ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলও সম্পন্ন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হলে পাল্টে যাবে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনমান।

জানা যায়, চলতি বছরের ৩০ ও ৩১ মার্চ এই রুটে নবনির্মিত ৮৪ কিলোমিটার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করেছে। পদ্মা সেতু সংযোগ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে কাশিয়ানী-নড়াইল হয়ে যশোরের সিঙ্গিয়া জংশন পর্যন্ত ১৬২ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনে ব্যয় নির্ধারণ ধরা হয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত ৮৪ কিলোমিটার রেল স্থাপনে ব্যয় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রম্নপ (সিআরসি) এই রেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলে অত্র অঞ্চলের কৃষকের উৎপাদিত পণ্য দ্রম্নত ও কম খরচে পৌঁছে যাবে রাজধানী ঢাকায়। এ পথে খুলনা থেকে তিন ঘণ্টা এবং যশোর থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পেঁৗঁছানো যাবে রাজধানীতে। ঢাকার সঙ্গে যশোরের দূরত্ব কমবে ১৯৩ কিলোমিটার। কিছুদিন আগেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে এটি ছিল স্বপ্ন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক আগ্রহে এ অঞ্চলের মানুষের কাছে এটি এখন বাস্তব।

প্রকল্পের প্রকৌশলী আবু ইউসুপ মো. শামীম বলেন, 'প্রকল্পের সামগ্রিক কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসের (জুন) যে কোনো সময় ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে গোপালগঞ্জ, নড়াইল, খুলনা, যশোর, বেনাপোলসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ বছরের স্বপ্নও পূরণ হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হবে ট্রেন চলাচলের দ্বার।'

জানা যায়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে এই রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ব্রডগেজ এই রেলপথে থাকছে ভাঙ্গা, কাশিয়ানী এবং যশোরের পদ্মবিলা ও সিঙ্গিয়াতে রেলওয়ে জংশন। এ ছাড়া নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল এবং যশোরের জামদিয়া ও রূপদিয়াতে রেলস্টেশন রয়েছে।

কাশিয়ানীর ব্যবসায়ী মো. হিরো মৃধা ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, 'আমাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে এই রুটে রেললাইন নির্মাণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।'

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রেললাইন উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রেলযোগে ঢাকা থেকে বেনাপোল, গোপালগঞ্জ, খুলনা ও যশোর যাতায়াত সহজ হবে। পাশাপাশি বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পণ্য সরাসরি পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহণে সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা। আর যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই যাতায়াত করতে পারবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে