শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

স্যাংশন, ভিসানীতি কেয়ার করে না সরকার :কাদের

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৫ মে ২০২৪, ০০:০০
ওবায়দুল কাদের

সরকার স্যাংশন-ভিসানীতি কেয়ার করে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। একটা দেশের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন, এটা নিয়ে এত মাতামাতি কিসের।'

মঙ্গলবার সচিবালয়ে অবস্থিত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিন দিনের সফরে এদিন সকালেই ঢাকায় পৌঁছেছেন ডোনাল্ড লু। আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটাই ঢাকায় তার প্রথম সফর।

লু'র সফর নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমি এ নিয়ে কোনো আলোচনা করতে চাই না। রুটিন আসা আসবে, যাবে। তারা কী করছে না করছে জানি না। তারা উপরে উপরে পাত্তা দেয় না, তলে তলে আবার কী করে সেটা তো বলা মুশকিল।'

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'একজন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাকে নিয়ে বাংলাদেশ এত মাতামাতি কেন? তার প্রয়োজনে সে আসছে। তাদের এজেন্ডা আছে। সম্পর্ক যখন থাকে, সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা থাকে। তো সেটা তারা করতে আসছেন। আমরা দাওয়াত করে কাউকে আনছি না।'

ডোনাল্ড লু'র সফরে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গের্ যাব এবং এর সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে সোমবার জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরর্ যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বলে আসছে, নিষেধাজ্ঞা উঠানোর প্রক্রিয়া বেশ 'জটিল'।

আগামীতে নতুন করে কোনো প্রকার ভিসানীতি আসতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমরা কোনো প্রকার স্যাংশন, ভিসানীতি এগুলো কেয়ার করি না।'

নির্বাচনের আগে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র কিছু বাংলাদেশির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে কূটনৈতিক টানাপড়েন নতুন মাত্রা পায়। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে 'বাধাগ্রস্ত' করে এমন কর্মকান্ডে জড়িতদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধ করতে তারা ওই ভিসানীতি কার্যকর করেছে।

সে সময় কয়েকটি ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র তাকে 'ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়' বলেও এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ তোলেন।

শেখ হাসিনা আবারও বাংলাদেশের ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন এখন দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে।

বিএনপি তাদের সমমনাদের সঙ্গে বৈঠকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনে জোর দিচ্ছে- এ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, 'ভারতীয় পণ্য বয়কটে জোর আন্দোলন এটা তাদের ব্যর্থ চেষ্টা। বিএনপির কোনো নেতাই ভারতীয় পণ্য বর্জন করবে না। কিছুদিন আগে টেস্ট কেস দেখলাম। এটা কি সম্ভব! ভারতীয় মসলা ছাড়া কি চলে! শাড়িসহ আরও অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আছে আনতে হয়। আমার মনে হয় এটা বিএনপির উদ্ভট চিন্তা, ব্যর্থ চেষ্টা। আসলে সব হারিয়ে বিএনপি এখন খড়কুটো ধরে বাঁচতে চায়। তাদের কোনো ইসু্য নেই। এখন ভারতীয় পণ্যকে ইসু্য করে নিয়েছে। বাংলাদেশের কাছে এটা নন ইসু্য।'

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিএনপি ও সমমনাদের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নেই। সম্প্রতি ঢাকায় তাদের দুটি সমাবেশও ফ্লপ হয়েছে। তাদের কর্মীরা হতাশ, নেতাদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।'

মেট্রোরেলের ভাড়ায় যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি ছিল, তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েও মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, 'এটি বাস্তবসম্মত নয়। পৃথিবীর কোনো দেশেই মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের নজির নেই। প্রতিবেশী দেশে ৫ শতাংশ পর্যন্ত নজির আছে। বাংলাদেশে এর যৌক্তিকতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।'

ঢাকায় রাস্তা থেকে লক্কড় ঝক্কড় বাস অপসারণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, 'চলাচলের অযোগ্য লক্কড় ঝক্কড় বাসগুলো ডাম্পিং করা হবে। তবে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে যেগুলো একরকম চলে, সেগুলো এখনই ডাম্পিং নয়।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ইলেকট্রিক বাসের কথাও আমরা বিবেচনা করছি। ইলেকট্রিক যানবাহন ব্যবহারকে উৎসাহিত করার আগ্রহ আছে সরকারের।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে