কিশোর গ্যাং আটক প্রসঙ্গে ডিবিপ্রধান

ফোন করে বলে 'ও তো আমার লোক'

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে 'কিশোর অপরাধের ধরন ও কারণ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ -সংগৃহীত
প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ফোনে কিশোর গ্যাংয়ের আটকদের মধ্যে কাউকে কাউকে ছেড়ে দিতে হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, আমরা যখন কিশোর গ্যাংয়ের কাউকে আটক করি, তখন কেউ ফোন করে বলে, 'ও তো আমার লোক, সে মাদক কারবার করে না।' রোববার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে 'কিশোর অপরাধের ধরন ও কারণ' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। হারুন অর রশীদ বলেন, কিশোর গ্যাং নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন বিষয়ের তাৎপর্য বিবেচনা করছি। বিভিন্ন সমাবেশে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কারণে আমরা পুলিশের সদস্যরা উঠেপড়ে লেগেছি। কিশোরদের বিষয়টি নিয়ে অনেক সময় কিছুটা কনফিউশান তৈরি হয়। ইউনিসেফ বলছে, ১০-১৯ বছরের মধ্যে ছেলেমেয়েরা এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আবার আমাদের সংবিধানে ১৬ বছর বলা আছে। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আজকাল বাচ্চারা সাত বছর বয়সেই ম্যাচুরিটি অর্জন করে ফেলছে। কিশোর গ্যাং বিভিন্ন নাম দিয়ে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করছে। ডিবিপ্রধান বলেন, প্রত্যেক এলাকায় যদি আমাদের লোক পাঠাই যে এরা কারা। সেখানে পোশাকের ধরন দেখলেই বোঝা যাবে এরা কারা। একসময় আমরা দেখতাম রাজনৈতিক নেতারা বস্তির ছেলেদের সস্তায় মিছিলে নিতেন, তাদের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতেন। এখন কিন্তু পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়েছে, কারণ বস্তির সংখ্যা কমে গেছে। আমরা সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তবে কিশোর গ্যাংয়ের জন্য যে শুধু তারা দায়ী তা নয়, একটি বড় ভাই গ্রম্নপ তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি বলেন, পারিবারিক শিক্ষাটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেটি সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে অপরাধ বাড়ছে। আমরা যখন কিশোর গ্যাংয়ের কাউকে আটক করি, তখন কেউ ফোন করে বলে, 'ও তো আমার লোক, সে মাদক কারবার করে না।' আবার তারা অনেক সময় এমনভাবে তদবির করে, দলের সিনিয়র নেতা ও মন্ত্রীদের মতো প্রভাবশালীদের গিয়ে বলে, 'ডিবি তো আমাদের লোকদের ধরে নিয়ে গেছে।' ওনারা যখন আমাদের ফোনটা করেন, তখন আমরা ভাবি এখন কথা না রাখলে তো পরে মাইন্ড করবে। অনেক সময় আমরা ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। সবসময় যে ছাড়ি তাও নয়।