ঢাকায় পর্দা নামল চর্যাপদ পুনর্জাগরণ উৎসবের

প্রকাশ | ১১ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুক্রবার চর্যাপদের পুনর্জাগরণ উৎসবের সংগীত পরিবেশন করেন ভাবশিল্পীরা -সংগৃহীত
রাজধানীতে তিন দিনের চর্যাপদ পুনর্জাগরণ উৎসবের পর্দা নেমেছে শুক্রবার। এ দিন বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চর্যাপদ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন নাট্যনির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফ। প্রশিক্ষণ দেন শাহ আলম দেওয়ান, সাইম রানা, সাধিকা সৃজনী তানিয়া ও বাউল অন্তর সরকার। সন্ধ্যায় 'চর্যাপদের পুনর্জাগরণ আসর' বসে জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে। এ পর্বে চর্যাসঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধকশিল্পীরা। ভাবনগর ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বুধবার এ উৎসব শুরু হয় রাজধানীর বাংলা একাডেমির ফটকের বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এ দিন বিকালে ভাবসাধকদের চর্যাপদের পুনর্জাগরণের ৫০১তম আসর শেষে চর্যাসঙ্গীত শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রথমবার তিন দিনের এই উৎসব শুরু হয়। ভাবনগর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নূরুননবী শান্ত জানান, উৎসবের দ্বিতীয় দিন বিকালে জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় 'চর্যাপদের পুনর্জাগরণ' বিষয়ক সেমিনার। এতে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপনের পাশাপাশি ছিল চর্যাগানের পরিবেশনা। পরে সেমিনারে 'চর্যানৃত্যের পুনর্জাগরণ' বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লুবনা মারিয়াম। 'ফোকলোর তত্ত্ব, সঙ্গীত নৃবিদ্যা ও ইউনেস্কো কনভেনশনের আলোকে চর্যাপদের গানের পুনর্জাগরণ' প্রসঙ্গে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভাবনগর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নূরুননবী শান্ত। তিনি বলেন, 'চর্যাপদ একক কোনো পরিবেশনা শিল্প নয়, বরং সুনির্দিষ্ট মৌলিক কর্মকান্ড; যা আত্মশুদ্ধি সাধনার মানুষ হয়ে ওঠার পন্থা হিসেবে প্রচীনকালে বিবেচনা করা হতো। বাংলাদেশে চর্যাগান চর্চার শাস্ত্রীয় উদ্যোগ বিরল হলেও কিছুটা লক্ষ করা গেছে। তবে তা সাধারণ চারণশিল্পীদের মধ্যে ছড়ায়নি। চর্যাগানের পুনর্জাগরণ প্রচেষ্টা এখানেই অনন্য।' সেমিনারে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, 'চর্যাপদের আগেও কোনো নিদর্শন ছিল কি না, তা আমরা জানি না। আমরা জানি না বলেই যে ছিল না, তা তো নয়। হয়ত ছিল। আমি যে কবিতাটি লিখেছি, সেই ভাবটিও হয়ত অন্য কোনো ভাবসাধকের মনে অন্য কোনোভাবে তৈরি হয়েছে।' সভাপতির বক্তব্যে অভিনেতা ও নাট্য সংগঠক আতাউর রহমান বলেন, 'আমরা জাতি হিসেবে গর্বিত, আমাদের যে পুঁথিপাঠ হতো, মেলা হতো; তা নিয়ে আমরা গর্বিত। চর্যাপদ বাংলা ভাষার আদি রূপ। চর্যাপদ থেকেই তো আজকে আমাদের ভাষা এই পর্যায়ে এসেছে।' এ দিন আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে শাহ আলম দেওয়ান, আব্দুল লতিফ শাহ, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, বাউল অন্তর সরকার, শিলা মলিস্নক, নাইম, আল আমিন সরকার পিপাসী, বাউল তাহমিনা, ইউসুফ মিয়া, ফকির আবুল হাশেম, গুঞ্জের আলী জীবন, মীনা পাগলী, আনিস মুন্সী, সিদ্দিক ফকির প্রমুখ।