শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১
বাজার দর

মাছ-সবজি ডিমের সঙ্গে চড়া মুরগির দামও

শুক্রবার রাজধানীর বাজারে রেকর্ড ৪২০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে সোনালি মুরগির কেজি। এর প্রভাবে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা দরে
যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ মে ২০২৪, ০০:০০
মাছ-সবজি ডিমের সঙ্গে চড়া মুরগির দামও

রাজধানীর বাজারে রীতিমতো উত্তাপ ছড়াচ্ছে সোনালি মুরগির দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ১শ' টাকা। অন্যদিকে সাধারণের নাগালের বাইরেই রয়েছে সবজির দাম। বাড়তির দিকেই রয়েছে মাছ, ডিম, পেঁয়াজসহ আলু মসুর ডাল ও অন্যান্য মসলা পণ্যের দাম।

শুক্রবার রাজধানীর বাজারে রেকর্ড ৪২০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে সোনালি মুরগির কেজি। এর প্রভাবে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা দরে। এছাড়াও ডিমের ডজনে ২০-২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৪৫ টাকা দরে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন চাহিদার তুলনায় সোনালির সরবরাহ অর্ধেকে নামায় হঠাৎ এই মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। তবে ব্রয়লারের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে এমন অস্বাভাবিক দামের কারণে অনেক ক্রেতাই মুরগি না কিনেই ফিরে গেছেন। তবে এর বিকল্প মাছের বাজারেও দেখা গেছে উত্তাপ। কল্যাণপুর বাজারে এদিন মুরগি কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, আমাদের দেশি মুরগি কেনার সামর্থ্য নেই তাই সব সময় সোনালি মুরগি কিনে থাকি, কিন্তু আজকে (শুক্রবার) যে দামে সোনালি বিক্রি হচ্ছে তা আমাদের মতো ক্রেতার পক্ষে কেনা অসম্ভব'।

বিক্রেতারা জানান গত একমাস ধরেই মুরগির বাজারে অস্থিরতা চলছে। প্রচন্ড গরমে কয়েক লাখ মুরগি মরে গেছে, বেড়েছে রোগ আক্রান্তের হারও। তাই মাংশ উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে বাজারে সরবরাহ কমেছে। এছাড়াও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সোনালির চাহিদা প্রায় ৩ গুণ বেড়ে যায়। এদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি হোটেল রেস্তরাঁয় এই মুরগির চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।

এদিকে গত সপ্তাহ থেকেই বাড়তির দিকে ডিমের বাজার। উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি গরমে ডিম সংরক্ষণ করতে না পারায় বাজারে অস্থিরতা চলছে বলে দাবি করেন পাইকারি বিক্রেতারা। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বাজারে সিন্ডিকেটের কারণেই এই মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে ডজনে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। শুক্রবার রাজধানীর পাইকারি বাজারে প্রতিডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫ টাকার উপরে।

ভোক্তা অধিকারের তথ্যানুযায়ী গত ৩ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে কোল্ড স্টোরেজগুলোতে প্রায় ১ কোটি ডিমের মজুত পাওয়া গেছে। যারা বাজারে ডিম ছাড়ছে না। এর মধ্যে দুটি স্টোরেজেই অর্ধকোটি ডিম পাওয়া গেছে যা বাজারে না ছেড়ে মজুত করে রাখা হয়েছে।

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হওলাদার যায়যায়দিনকে বলেন, ডিমের বাজারে চলমান সংকট তৈরি করেছে কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা। গরমের সুযোগ নিয়ে খামারিদের কাছ থেকে মাত্র ৭ টাকা ৫০ পয়সায় প্রতি পিস ডিম কিনে পাইকারি বাজারে প্রায় ১২ টাকা দরে বিক্রি করছেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিমের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার থেকে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে সোনালির দাম বৃদ্ধি হয়েছে গরমে উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে। দেখা গেছে খামারিদের কেনা ১ দিনের বাচ্চাগুলোর ২০ শতাংশ মরে যাচ্ছে। ফলে সব ধরনের মাংশ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে চড়া দাম অব্যাহত রয়েছে সবজির বাজারে। এদিন প্রায় সব ধরনের সবজি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকার উপরে। এর মধ্যে বেগুন, কাঁকরোল ও বরবটির কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা, সজনে ডাটা ১৬০-১৮০ টাকা; পেঁপে, ঝিঙ্গা, ধুন্দল, রেখা, ঢেঁড়স ও টমেটোসহ করোলস্না বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১শ' টাকায়। এছাড়াও প্রতিকেজি কাঁচা মরিচে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা দরে। এছাড়াও বাড়তির দিকেই রয়েছে পেঁয়াজসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিকে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা দরে।

এছাড়া বেড়েছে মাছের দাম। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওড়ের মাছ একেবারেই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। চাষের মাছও এদিন বিক্রি হয়েছে চড়া দামে। বিক্রেতারা জানান মাছ বাজারে ক্রেতা চাপ বৃদ্ধিতে সব ধরনের মাছে কেজিতে ৫০ থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এদিন ৪শ' থেকে ৫শ' গ্রামের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২শ' টাকার উপরে। ৮শ' গ্রামের উপর ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৮শ এবং ১ কেজির উপর ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৪ থেকে ২৮শ টাকা দরে। মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০-৪০০ টাকা,

বড় কাতল ৪শ' টাকা, বড় পাঙ্গাশ ২২০-২৫০ টাকা, চাষের কই (ছোট) ৩শ টাকা, তেলাপিয়া ২৩০ টাকা, শিংমাছ ৫শ' টাকার উপরে, শোল হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৪

মাছ ৮শ' টাকা, বড় পাবদা ৫শ', ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৬শ' থেকে ৭শ' টাকা, মলা মাছ ৬শ' টাকা, বাইলা ৮শ' টাকা, পোয়া মাছ ৪শ' টাকা, মাঝারি আকারে বোয়াল ৫শ' থেকে ৬শ' টাকা, গুড়ামাছ ৩শ' টাকা, ছোট চিংড়ি ৫শ' টাকা, গলদা ৯শ' এবং রূপচাঁদা ১২শ' টাকা দরে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে