সংবাদ সম্মেলনে কাদের

প্রধানমন্ত্রী স্বজন বলতে বুঝিয়েছেন স্ত্রী-সন্তান

প্রকাশ | ০৪ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
উপজেলা নির্বাচন থেকে স্বজনদের সরে যাওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আমি যেসব বক্তব্য রেখেছি, অনেকে ভেবেছিলেন আমি নিজেই নিজের নামে বলে বেড়াচ্ছি। কিন্তু গতকাল (বৃহস্পতিবার) নেত্রী নিজেই এ নিয়ে খোলাসা করে বলেছেন। স্বজন বলতে তিনি দুটো শব্দ উলেস্নখ করেছেন- স্ত্রী ও সন্তান।' শুক্রবার দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সেখানে (উপজেলা নির্বাচনে) কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ ও প্রভাব বিস্তার করা যাবে না। প্রশাসনকে প্রভাবিত করা যাবে না। নির্বাচনকে প্রভাবিত করা যাবে না। সে কথা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) পরিষ্কারভাবে বলেছেন। তার (প্রধানমন্ত্রীর) গাইডলাইন অনুযায়ী আমরা আমাদের পার্টির কার্যক্রম পরিচালনা করব এবং উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারেও আমাদের নেত্রীর গাইডলাইনস অনুযায়ী আমাদের দায়িত্ব পালন করব।' এখনো অনেকের স্বজন প্রার্থী রয়ে গেছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা শুরু করেছেন। সামনে আরও সময় আছে। প্রত্যাহার করতে চাইলে নির্ধারিত সময়ের পরও করা যায়। উপজেলা নির্বাচনে নিজের ভাইয়ের প্রার্থী হওয়া নিয়েও সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, 'একটা প্রশ্ন হয়তো আপনারা করতে পারেন, আমার স্বজনও একজন প্রার্থী হয়েছেন, আমার নিজের উপজেলায়। সেখানে প্রশ্নটা হচ্ছে আমার এই প্রার্থিতার পেছনে সমর্থন আছে কি না, সম্মতি আছে কি না, আমি তার পক্ষে প্রশাসন বা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছি কি না। সরেজমিন সেটাই দেখার বিষয়। আমার দলের এর সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই। নেতৃস্থানীয় কারও সমর্থন নেই। আমার সমর্থন তো প্রশ্নই ওঠে না। কাজেই আর এটা শেষ পর্যন্ত সরে যাবে না, এটাও বলা যায় না।' ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখনো বিদেশি শক্তির চাপ অনুভব করে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'নির্বাচনের আগে চাপ স্পষ্ট ছিল। কিন্তু যারা চাপ দেবেন, তারা নিজেরাও এখন যথেষ্ট চাপে আছেন। কারণ আরব বসন্তের স্পর্শ আটলান্টিকের ওপারে গিয়েও পড়েছে। তা আমরা দূর থেকেই দেখতে পারছি।' সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমাদের দলের ৭৫তম রজতজয়ন্তী উদ?যাপন করব। সম্পাদকমন্ডলীর সভায় বিস্তারিত কর্মসূচি প্রণয়ন করব। এর মধ্যে ১৭ মে প্রধানমন্ত্রী, আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষেও সারাদেশে সব পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করব। সে ব্যাপারেও বিস্তারিত আলোচনা করব।' ওবায়দুল কাদেরের ভাষ্য, 'এই মুহূর্তে দেশে যে বাস্তবতা, এখানে বিরোধী দল বলতে কথাসর্বস্ব এবং বক্তব্য বিবৃতি সর্বস্ব যে রাজনীতি, তার বাইরে রাজনীতির আউটডোরে তেমন কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ে না। বাস্তবে আমাদের বিরোধী দল নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে এবং আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করতে গিয়ে সারাদেশে যে অবস্থার সৃষ্টি করেছে, তাতে তাদের নেতিবাচক রাজনীতি সম্পর্কে জনমনে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে।' জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া যে যেটাই বলুক আন্দোলন কোনো দিন সফল হতে পারে না, এমনটা উলেস্নখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নিজেরাই এখন বিভক্ত। তাদের দলের বহুদিন ধরে কাউন্সিল নেই। তাদের ঘরোয়া রাজনীতি বলতে গেলে ঝিমিয়ে পড়েছে। নেতায় নেতায় মিল নেই। দল আবার ক্ষমতায় আসবে এ ধরনের আশাবাদ নেতারা ব্যক্ত করলেও কর্মীরা এই আশার কারণ দেখছেন না। কর্মীরাও হতাশ হয়ে পড়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আনিসুর রহমান প্রমুখ।