দেশের তিন জেলায় বজ্রপাতে ছয়জনের মৃতু্য হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারে দুইজন, রাঙামাটিতে তিনজন এবং খাগড়াছড়িতে একজনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে কক্সবাজার জেলায় থেমে থেমে বজ্রপাতসহ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় পেকুয়া উপজেলার দুই ইউনিয়নে বৃষ্টি থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই চাষির মৃতু্য হয়। নিহতরা হলেন- উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কোদাইলস্নাদিয়া এলাকার জমির হোসেনের ছেলে মো. দিদার হোসেন (২৫) এবং রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে আরাফাতুর রহমান (১৩)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, 'ভোর থেকে পেকুয়ায় থেমে থেমে বজ্রপাতসহ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে মাঠে থাকা লবণ পলিথিনে ঢেকে রাখতে যান দিদার হোসেনসহ পরিবারের আরও ২-৩ জন। এক পর্যায়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান দিদার।'
ইউএনও বলেন, 'প্রায় একই সময়ে রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টি থেকে লবণ রক্ষা করতে গিয়ে কিশোর আরাফাতুর রহমান একইভাবে বজ্রপাতে প্রাণ হারান।' মৃতদের মরদেহ স্বজনরা বাড়ি নিয়ে গেছেন বলেও জানান ইউএনও।
নানিয়ারচর (রাঙামাটি) প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে জেলা সদর ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃতু্য হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও সাতজন। নিহতরা হলেন- শহরের সিলেটি পাড়ার বাসিন্দা মো. নজির (৫০) এবং বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপাকারী ইউনিয়নের মুসলিম বস্নক এলাকার বাসিন্দা বাহারজান বেগম (৫৫) এবং সাজেকের
লংথিয়ান পাড়ার তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭)।
রূপকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যাসমিন চাকমা বলেন, 'ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম বস্নক এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান।'
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, 'অনেক দিন পর আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হয়। এতে রূপাকারী ইউনিয়নে বাহারজান নামে একজন এবং সাজেকে তনিবালা ত্রিপুরা নামের আরেক নারী নিহত হন।'
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে ইউএনও বলেন, 'এছাড়া সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় বজ্রপাতে সাতজন আহত হয়েছেন।'
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক শওকত আকবর বলেন, 'সকালে শহরের সিলেটি পাড়া থেকে নজিরকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।'
অন্যদিকে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছেন এক কিশোর। ইয়াছিন আরাফাত নামের ওই কিশোর উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ার বাসিন্দা ইউসুফ মিয়ার ছেলে।
স্বজনদের বরাত দিয়ে বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, 'বৃষ্টির সময় উঠানের পাশেই আম কুড়াতে যায় দুই ভাই। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ছোট ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও বড় ভাই ইয়াছিন আরাফাত ঘটনাস্থলেই মারা যান।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডেজী চক্রবর্তী বলেন, 'নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।'