শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

দুই মামলায় ট্রান্সকমের ৩ কর্মকর্তার জামিন

যাযাদি ডেস্ক
  ০১ মে ২০২৪, ০০:০০
দুই মামলায় ট্রান্সকমের ৩ কর্মকর্তার জামিন

অর্থ আত্মসাৎ, সম্পত্তি দখল ও অবৈধভাবে শেয়ার হস্তান্তরের অভিযোগে গুলশান থানার দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন ট্রান্সকম গ্রম্নপের তিন কর্মকর্তা।

ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুলতান তোফাজ্জল হোসেন মঙ্গলবার শুনানি শেষে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তদন্ত প্রতিবেদন হওয়া পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

এই তিনজন হলেন- ট্রান্সকম গ্রম্নপের ব্যবস্থাপক আবু ইউসুফ মো. সিদ্দিক, পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) আব্দুলস্নাহ আল মামুন এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক।

এর আগে ২১ এপ্রিল তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছিল আদালত।

ট্রান্সকম গ্রম্নপের ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, সম্পত্তি দখল এবং অবৈধভাবে কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর করার অভিযোগে গত ২২ ফেব্রম্নয়ারি গুলশান থানায় আটজনকে আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করেন কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমানের মেয়ে শাযরেহ হক।

তিনি তার বোন সিমিন রহমান, মা শাহনাজ রহমান এবং সিমিন রহমানের ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেনকেও মামলায় আসামি করেছেন। গত ৩ এপ্রিল তারা আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। লতিফুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ রহমান এখন ট্রান্সকম গ্রম্নপের চেয়ারম্যান। তার বড় মেয়ে সিমিন রহমান গ্রম্নপের সিইও। আর নাতি যারাইফ আয়াত হোসেন ট্রান্সকমের হেড অব ট্রান্সফরমেশন। ছোট মেয়ে শাযরেহ হকও ট্রান্সকম গ্রম্নপের একজন পরিচালক।

মামলা হওয়ার পর রিমান্ড আদেশ পাওয়া তিনজনসহ গ্রম্নপের পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন ট্রান্সকম গ্রম্নপের আইন উপদেষ্টা ফখরুজ্জামান ভুইয়া, পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) কামরুল হাসান।

তিন মামলায় দন্ডবিধির ৪০৬, ৪১৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭০ ও ৪৭১ ধারায় অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ, জালিয়াতি, প্রতারণা, মূল্যবান জামানত জাল করে খাঁটি হিসেবে চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

একটি মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শাযরেহ হকের বাবা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এফডিআরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রেখে মারা যান। সেসব অ্যাকাউন্টের নমিনি ছিলেন তার মা শাহনাজ রহমান।

২০২০ সালের ১ জুলাই লতিফুর রহমান মারা যাওয়ার পর ওই টাকা তার উত্তরাধিকারীদের (ওয়ারিশ) মধ্যে 'বণ্টন করে দেওয়ার কথা থাকলেও' সিমিন সব টাকা তার নিজের ও মায়ের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলেন বলে অভিযোগ শাযরেহের।

তার দাবি, সিমিন ট্রান্সকম ইলেকট্রনিক্সের ১৮ শতাংশ শেয়ার কিনে নেওয়ার কথা বলে ২০২০ সালের ৩ অগাস্ট ওই ১০০ কোটি টাকা থেকে ৬০ কোটি টাকা নিজের নামে সরিয়ে নেন।

শাহনাজ ও সিমিন মিলে লতিফুরের 'অন্য উত্তরাধিকারীদের বঞ্চিত করে' এই কাজ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন শাযরেহ।

আরেক মামলায় তার অভিযোগ, সিমিন ট্রান্সকমের আরও চার কর্মকর্তার সহযোগিতায় 'জালিয়াতির মাধ্যমে তিনটি হস্তান্তর দলিল তৈরি করে' সেগুলো জয়েন্ট স্টক কোম্পানির নিবন্ধকের দপ্তরে জমা দিয়ে 'বেআইনিভাবে' ট্রান্সকমের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিকানা নিজের হাতে নেন।

শাযরেহর দাবি, তার বাবা তাকে ৪ হাজার ২৭০টি শেয়ার, তার ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে ৪ হাজার ২৭০টি শেয়ার এবং তার বোনকে ১৪ হাজার ১৬০টি শেয়ার হস্তান্তর করেছেন বলে তাকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি কখনোই হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষর করেননি।

তার বাবাও জীবিত অবস্থায় কখনো হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষর করেননি বলে দাবি করেছেন লতিফুরের ছোট মেয়ে। তার অভিযোগ, জালিয়াতির মাধ্যমে ওইসব নথি তৈরি করেছে আসামিরা।

তৃতীয় মামলায় অভিযোগ, সিমিন ও শাহনাজ ট্রান্সকমের তিন কর্মকর্তার সহযোগিতায় তার এবং তার ভাইয়ের সই জাল করে ডিড অব সেটেলমেন্ট বা মীমাংসা দলিল তৈরি করেন। পরে ওই দলিল ব্যবহার করে ট্রান্সকম গ্রম্নপের শেয়ার নিজেদের নামে নিয়ে সিমিন ও শাহনাজ গ্রম্নপের চেয়ারম্যান ও সিইওর পদ নেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে তিনি কখনো কোনো ডিড অব সেটেলমেন্ট করেননি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে