সংবাদ সম্মেলনে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

কোরবানির জন্য প্রস্তুত ১ কোটি ৩০ লাখ পশু

প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেছেন, ঈদুল আজহা সামনে রেখে গরু বা অন্য কোনো পশু আমদানির পরিকল্পনা সরকারের নেই। কারণ, দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক গবাদিপশু লালন-পালন করছেন খামারিরা। তবে কোনো গোষ্ঠী যাতে কোরবানিযোগ্য পশুর দাম নিয়ে কারসাজি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবে সরকার। রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, 'কোরবানির ঈদের জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে আমাদের গবাদিপশুর বাজার স্থিতিশীল থাকে। পশু যাতে আমাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে তা নিয়ে খামারিদের সঙ্গে কথা হয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'তাদের আশ্বস্ত করেছি, তারাও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এ বছর গবাদিপশু আমদানি করার প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশীয় উৎপাদিত যে গবাদিপশু খামারিরা লালন-পালন করেন সেটাই যথেষ্ট। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের আয়োজন ও ব্যবস্থাপনা ঠিক আছে।' মন্ত্রী বলেন, 'আগামী কোরবানির ঈদে বাজার যাতে কেউ অস্থিতিশীল করতে না পারে সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমরা আগামী কোরবানির ঈদ আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করতে পারব। সেই আনন্দ প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে থাকবে- সেটাই প্রত্যাশা করছি।' 'গতবারের তালিকার চেয়ে আমাদের তিন লাখ বাড়তি সরবরাহ আছে। গত বছর আমাদের ১ কোটি ২৫ লাখ গবাদিপশু বাজারে ছিল। কিন্তু অবিক্রীত ছিল ১৯ লাখ। সেই তুলনায় এবার ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি পশুর সরবরাহের আয়োজন রাখা হয়েছে,' যোগ করেন মন্ত্রী। চাঁদাবাজির কারণে পশুর দাম অনেক বেড়ে যায়, এটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'ওই সময়ে এক বিশেষ শ্রেণির মানুষ বিশেষ সুযোগ নেয়। যে কারণে অনেক সময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে কোরবানির আগে আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে ঠিক করব, কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।' এ বছর পশু আমদানির কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের নেই উলেস্নখ করে মন্ত্রী বলেন, 'যদি কেউ চোখ ফাঁকি দিয়ে আনতে চায়, তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সীমান্তে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।' মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই সহোদর কিশোর শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে, শিগগিরই ফলাফল মিলবে। হত্যাকান্ডে জড়িত অপরাধীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন ধরতে পারছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় এরই মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩১ আসামির বিরুদ্ধে তিনটি ফৌজদারি মামলা হয়েছে। কাজেই এ ক্ষেত্রে আমি বলবো, আবেগে গা না ভাসিয়ে আমাদের বুঝতে হবে তাদের সামর্থ্য ও সীমাবদ্ধতা। যারা এর সঙ্গে জড়িত তারা পলাতক, তাদের খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেষ্টা অব্যাহত। মধুখালীর এই হত্যাকান্ডে অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে স্থানীয় জেলা প্রশাসককে পুরস্কার ঘোষণা করতে হলো কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন?, 'যে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে। সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রতিদিন অভিযান চলছে। আশা করছি, শিগগির একটা ফলাফল আমরা পাব।' গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মধুখালীর ডুমাইনের পঞ্চপলস্নীতে মন্দিরে আগুন দেওয়ার সন্দেহে গুজব ছড়িয়ে বাঁশ, লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে দুই কিশোর সহোদর শ্রমিক আশরাফুল খান (১৭) ও আরশাদুল খানকে (১৫) হত্যা করা হয়। গুরুতর জখম করা হয় আরও পাঁচজনকে। তারা সেখানে পঞ্চপলস্নী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণে কাজ করছিলেন। এ ঘটনায় চারটি মামলা করা হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১৫ ও ৪৩ সেকেন্ডের দুটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, এক ব্যক্তিকে স্কুলের কক্ষে মেঝেতে ফেলে পেটানো হচ্ছে। এ সময় ডুমাইন ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন ও মেম্বার অজিত কুমার সরকার মারপিট করছিলেন দেখা যায়। ওই ভিডিও প্রকাশের পর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন ও অজিত কুমার গা ঢাকা দিয়েছেন।