শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

চট্টগ্রামের ৫ জেলায় দুই দিনের পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক

চুয়েটে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদ
চট্টগ্রাম অফিস
  ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
চট্টগ্রামের ৫ জেলায় দুই দিনের পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের অবরোধ চলাকালে বাস পোড়ানোর প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর গণপরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আজ থেকে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় এই ধর্মঘট চলবে।

শনিবার দুপুরে এক জরুরি বৈঠকে চট্টগ্রাম বিভাগীয়, জেলা মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা ধর্মঘটের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেন। ধর্মঘটের আওতায় বাস, মিনিবাস ও হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন গণপরিবহণ থাকবে।

শনিবার বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহণ মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও হাটহাজারী পৌরসভার প্রশাসক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, 'রোববার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা এই ধর্মঘট চলবে।'

তিনি বলেন, 'কয়েকদিনে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি পোড়ানো ও সড়কে নৈরাজ্যের

প্রতিবাদসহ চার দফা দাবি আদায়ে এই পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। ধর্মঘট পালিত হবে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলায়।'

বাসচাপায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সড়ক অবরোধের সময় বাসে আগুন দেয় শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় এখনো আন্দোলনে রয়েছেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়েটের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনেও তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর চুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরে তা রহিত করে ১১ মে পর্যন্ত বলবত রাখা হয়।

এতে আন্দোলনে কিছুটা ভাটা পড়ে শিক্ষার্থীদের। এই সুযোগে বাসে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর গণপরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

সূত্র মতে, গত ২২ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে শাহ আমানত সার্ভিসের একটি বাসের নিচে চাপা পড়ে মোটর সাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এর জের ধরে ওইদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। এরই মধ্যে ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসচালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হন।

২৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা চুয়েটের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন। এরপর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। ওই বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনও করেন।

অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগামী ১১ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিকালে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময় একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবেন। যদিও জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে ফের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে