গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে ইসরাফিল ও রোকেয়া নামে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। মরদেহের পাশে পড়ে থাকা চিরকুট দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা।
শুক্রবার সকালের দিকে মুলাইদ গ্রামের বেগুনবাড়ী এলাকার ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে ওই স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইসরাফিল মিয়া (১৮) শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার হলদি গ্রামের মফিজুল মিয়ার ছেলে ও রোকেয়া খাতুন (১৭) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। তারা দীর্ঘদিন পরিবারের সঙ্গে শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
নিহত রোকেয়ার বড়ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, 'প্রেম করে ৭-৮ মাস আগে পরিবারের অমতে বিয়ে করে ইসরাফিল ও রোকেয়া নিখোঁজ ছিলেন। পরে থানায় জিডি করে ওদের সন্ধান পেয়ে উভয় পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে মিলমিশ হয়। এরপর থেকে তাদের সম্পর্ক ভালোই ছিল। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনো কলহ ছিল না। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ৪ দিন বাড়ি ছিল না। পরে তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার আর তাদের সঙ্গে আমার
কথা হয়নি। আজকে সকালে তাদের মৃতু্যর খবর পেয়ে এখানে আসি।'
ইসরাফিলের মা জানান, শুক্রবার সকালে ছোট বোন ইসরাফিলের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান। এসময় ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে আমরা রুমে আসি। এসময় রোকেয়ার লাশ পড়েছিল। পরে তাদের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
সেই চিরকুটে লেখা ছিল, 'মা-বাবা আমাকে মাফ করে দিও, আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না। কারও কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতাছে। সবাই ভালো থাকবা। মো. ইসরাফিল। মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁস দিল। তার জন্য সম্পন্ন আমি দায়ী। এতে কারও কোনো দোষ নাই।'
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান যায়যায়দিনকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের আলামত ও পাশে থাকা চিরকুট বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা।