বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১
সংকট সমাধানের আশ্বাস প্রশাসনের

সেশন জটে বিসিএসের স্বপ্নভঙ্গ পাবিপ্রবির কয়েকশ' শিক্ষার্থীর

পাবনা ও পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
সেশন জটে বিসিএসের স্বপ্নভঙ্গ পাবিপ্রবির কয়েকশ' শিক্ষার্থীর

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান রাব্বি (ছন্দনাম) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরের সামনে বিষণ্নমনে বসেছিলেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ও ব্যাচমেটরা বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারলেও সেশনজটের কারণে তার স্বপ্ন অপূরণীয়ই রয়ে গেল। বৃহস্পতিবার আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটে পড়া ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ওই শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন থাকলেও সেশনজটের

কারণে ৫টি অনুষদে ২১টি বিভাগের মধ্যে ৬টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। এবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট, প্রশাসনিক জটিলতা, নির্দিষ্ট একাডেমিক ক্যালেন্ডার না থাকাসহ নানা কারণে এই সেশনজটের সৃষ্টি হয়েছে। যা দূর করার চেষ্টা নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বেশির ভাগ বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনার্স শেষ করলে ও অবহেলার কারণে কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা এখনো শুরুই হয়নি। সেশনজটের কারণে সরকারি চাকরি থেকে পিছিয়ে পড়ছেন এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ছয়টি বিভাগের তিনটিতে জট রয়েছে। এ কারণে ইংরেজি, বাংলা ও ইতিহাস বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এই বছর বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। এই অনুষদের বাকি তিনটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিসিএস আবেদন করতে পেরেছেন।

বিজ্ঞান অনুষদের পাঁচটি বিভাগের মধ্যে তিনটি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা সেশনজটের কারণে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। অন্যদিকে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পেরেছেন।

২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পদার্থ বিভাগের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের শিক্ষা জীবন থেকে প্রায় দেড় বছরের মতো সময় কেড়ে নিয়েছে। এখন যদি এই সেশনজটের কারণে আরও বসে থাকা লাগে তাহলে আমাদের জীবনের মূল্য কোথায়? এ সমস্যা সমাধানের জন্য উপাচার্য, ডিন ও শিক্ষকদের কাছে বিশেষ অনুরোধ করছি। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের যেন এমন পরিস্থিতিতে না পড়তে হয়।

এ বিষয়ে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মীর খালেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, আমরা শিক্ষকরা সবসময় শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক। কখনো একজন শিক্ষক চান না কোনো শিক্ষার্থী সেশনজটে পড়ুক। কিন্তু নানাবিধ নিয়ম আর সংকটে সেশনজটের সৃষ্টি হয়। তবে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই সমস্যা আর থাকবে না। সব বিভাগের জন্য একই একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একই সঙ্গে সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হবে। তার পরও এসব বিভাগের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রম্নত সম্ভব পরীক্ষা শেষ করার চেষ্টা করা হবে।

এ বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হক বলেন, সেশনজটের মূল কারণ হলো আগে একেক বিভাগের পরীক্ষা একেক সময় হতো। এতে করে বিভাগগুলো সেশনজটে পড়ত। তবে এসব সমস্যা এখন আর হয় না। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের একই সঙ্গে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আশা করি দ্রম্নত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজট মুক্ত হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে