ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও পস্ন্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক সেবন করে এবং প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে তামাক কর বৃদ্ধির দাবি'তে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সংগঠন দুটি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটি জানায়, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর দেশে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃতু্যবরণ করে। তামাকজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় সরকারের ব্যয় এ খাত থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব আয়ের তুলনায় অনেক বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, অথচ একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।
তাই আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের তামাক পণ্যের ওপর কার্যকর করারোপের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সংগঠন দুটির নেতারা বলেন, তামাক পণ্যের দাম বাড়লে ব্যবহার কমে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এটি প্রমাণিত। এমতাবস্থায় সিগারেটের নিম্নস্তরের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ৬০ টাকা; মধ্যমস্তরের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ৮০ টাকা; উচ্চস্তরের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ১৩০ টাকা ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকা প্যাকেটের দাম ১৭০ টাকা ধার্যের দাবি জানাচ্ছি।
সংগঠন দু'টির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, আসন্ন বাজেটে তাদের প্রস্তাবিত তামাক কর বাস্তবায়ন করা হলে দেশে সিগারেটের ব্যবহার ১৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ হবে। একই সঙ্গে ৫ লাখ ৪০ হাজার ৬৫৬ তরুণ জনগোষ্ঠীর অকাল মৃতু্য প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে; যা আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি।
সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, দেশে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সি নাগরিকদের মধ্যে ১৮ শতাংশ ধূমপান করেন। আবার কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন পাবলিক পেস্নসে প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে তামাকের ক্ষতিকর দিকে থেকে রক্ষায় সব ধরনের তামাক পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ তামাক ব্যবহার কমাতে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি পন্থা কার্যকর কর আরোপ। আমাদের এই প্রস্তাব গ্রহণ করে কার্যকর কর আরোপ করা হলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে ১০ হাজার কোটি টাকা; যা বিগত বছরের থেকে ২৮ শতাংশ বেশি।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ বাপ্পিসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।