শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

আ'লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য ইউনুছ সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান

যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ

আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে এই নিয়োগ দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ ইউনুছ সিডিএর বর্তমান চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিনের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

চেয়ারম্যান পদে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডলফিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে বুধবার।

চট্টগ্রামের রাজনীতিতে প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ ইউনুছ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ স্বাক্ষরিত বুধবারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, 'চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮ এর ধারা-৭ অনুযায়ী মোহাম্মদ ইউনুছকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী তিন বছর মেয়াদে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ প্রদান করা হলো। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনস্বার্থে এ অফিস আদেশ জারি করা হলো।'

সিডিএর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, 'এইমাত্র আমি প্রজ্ঞাপন পেয়েছি। আমি চট্টগ্রামবাসীর কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চাই। আমি একজন রাজনৈতিককর্মী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। শুক্রবার চট্টগ্রাম এসে আপনাদের সঙ্গে কথা বলব।'

২০০৯ সাল থেকে সরকার সিডিএ চেয়ারম্যান পদে রাজনৈতিক নিয়োগ দিয়ে আসছে। সেবার প্রথম সিডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমানে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের সংসদ সদস্য আবদুচ ছালামকে।

টানা ১০ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন আবদুচ ছালাম। এরপর ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিনকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর আবারও ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদে তিন বছরের জন্য নিয়োগ পান ডলফিন।

স্কুল পর্যায় থেকে ছাত্রলীগ করা মোহাম্মদ ইউনুছ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ১৯৬৮-৬৯ সালে চট্টগ্রাম মিউনিসিপল হাই স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ সালে হন শহর ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ নগরীর লালদীঘি মাঠে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোড়ান যে কয়জন ছাত্রনেতা তাদের অন্যতম ছিলেন মোহাম্মদ ইউনুছ।

১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি নৌ-কমান্ডোদের সঙ্গে চট্টগ্রাম শহরে প্রথম সংঘর্ষের পর রাইফেলসহ গ্রেপ্তার হন ইউনুছ। প্রায় দুই মাস নির্যাতন সহ্য করার পর চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মোহাম্মদ ইউনুছসহ কয়েকজন পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে গেরিলা প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৬ সালে প্রতিরোধ যুদ্ধ করতে গিয়ে ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হন মোহাম্মদ ইউনুছ। ১৯৮০-৮২ পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম শহর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হন ১৯৮৮ সালে।

১৯৭০ সালে ৯ মাস, ১৯৭১ সালে ২ মাস ৬ দিন, ১৯৭৬ সাল থেকে চার বছর মোহাম্মদ ইউনুছ কারাগারে বন্দি ছিলেন।

সবশেষ সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগের প্রতিবাদে নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের লাগাতার ৪৪৫ দিনের আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন মোহাম্মদ ইউনুছ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে