আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের কর ও মূল্য উচ্চ হারে বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার বিড়ি শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টাঙ্গাইল জেলার বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তারা জানান, সরকার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তামাকপণ্যের বিদ্যমান কর ব্যবস্থা সংস্কার করলে প্রায় ১৫ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত
হবে এবং প্রায় ১০ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ১১ লাখ জনগোষ্ঠীর তামাক ব্যবহারজনিত অকালমৃতু্য রোধ করা সম্ভব হবে।
মানববন্ধনে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের আগে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের কর ও মূল্য উচ্চ হারে বাড়ানোর দাবি জানান বক্তারা।
অন্যান্য স্তরের তুলনায় নিম্ন স্তরে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের ধূমপায়ীকে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করবে এবং উচ্চ স্তরগুলোয় সিগারেটের দাম বাড়লে ধূমপায়ীদের সস্তা ব্র্যান্ড বেছে নেওয়ার আগ্রহ কমবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশকৃত সুনির্দিষ্ট কর প্রবর্তনের মাধ্যমে কর পদ্ধতির সংস্কার (যা বিশ্বের অধিকাংশ দেশে প্রচলিত রয়েছে) সিগারেট করকাঠামোর কার্যকারিতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
টাঙ্গাইল বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, 'তামাকজাত পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রতিনিয়তই আমরা নানা স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন: শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, মানসিক অবসাদ ইত্যাদির সম্মুখীন হই। এই প্রক্রিয়ায় আমরা নিতান্তই জীবিকার তাগিদে যুক্ত হয়েছি। আমরা চাই তামাকপণ্যের ওপর উচ্চ কর আরোপ করা ও দাম বাড়ানো হোক। পাশাপাশি আমাদের (বিড়ি শ্রমিকদের) বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার সুযোগ দেওয়া হোক।'
তিনি আরও বলেন, 'তরুণদের ধূমপান থেকে বিরত রাখতে কম দামি বিড়ি ও সিগারেটের কর-মূল্য ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে, যাতে এগুলো আর সুলভ না থাকে।'
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে টাঙ্গাইল বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ জয়মনি বেগম বলেন, 'যেহেতু বারবার কর বাড়িয়েও নিম্ন স্তরের সিগারেট ও বিড়ির দাম সুলভ রয়ে যাচ্ছে তাই নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে সুনির্দিষ্ট ও কার্যকরী কর আরোপ করার। নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম বাড়ান, যাতে তা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়।'
মানববন্ধনে বিড়ি শ্রমিকরা দাবি করেন, কার্যকর হারে কর বাড়িয়ে যেন নিম্নস্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার প্যাকেটের নূ্যনতম মূল্য ৬০ টাকা, মধ্যম স্তরে ৮০ টাকা উচ্চ স্তরে ১৩০ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরে ১৭০ টাকা করা হয়।
মানববন্ধনে সার্বিক সহযোগিতা করে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) এবং ডরপ যুব ফোরাম। এ সময় বিড়ি শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কর বৃদ্ধির দাবিতে আরও বক্তব্য দেন ডরপের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রুবিনা ইসলাম। এ ছাড়া প্রায় অর্ধশতাধিক বিড়ি শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।