রাজধানীর মিরপুর পলস্নবী এলাকায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে রিহান ইসলাম পাভেলকে হত্যায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে হত্যাকান্ডে সন্দেহভাজন মূলহোতা হাবিবও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
পুলিশ বলছে, রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় মাদক, চাঁদাবাজি ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিহত পাভেল ও হাবিবের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ নিয়ে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর পাভেল ও তার সঙ্গীরা হাবিবকে কুপিয়ে আহত করে। ওই ঘটনার রেশ ধরে গত রোববার (১৪ এপ্রিল) মিরপুর পলস্নবীর স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকায় পাভেলকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে হাবিব ও তার সঙ্গীরা।
এ ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর পলস্নবী থানা পুলিশ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ডিএমপি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগের পলস্নবী জোনাল টিম টাঙ্গাইল, বরগুনা ও বরিশাল জেলায় অভিযান চালিয়ে মূল আসামি হাবিবসহ (২৮) তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- মো. রায়হান বাবু (২৪), মো. সোহেল তোতা মামা (২৪), মো. বাচ্চু কাজল বাচ্চু (২৩), আনিস (২২), মিলন হোসেন (৩৭), শাহাবুদ্দীন (২৮), সোহান ইসলাম (২৬)। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মিন্টু রোডে
ডিবি কার্যালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। ডিএমপি'র গোয়েন্দা পুলিশের মিরপুর বিভাগের পলস্নবী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রাশেদ হাসান বলেন, পাভেল বাসের স্টাফ ছিল। তার পাশাপাশি পাভেল-হাবিবসহ অন্যরা মাদককারবারি, চাঁদাবাজি ও এলাকার আধিপত্য বিস্তারে লিপ্ত ছিল। এ নিয়েই তাদের মধ্যে দন্ডের সৃষ্টি।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন উর রশীদ জানান, বাড্ডা এলাকার মাদক, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বছরে ডিসেম্বরে পাভেল-নজরুলসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে হাবিবের ওপর হামলা চালায়। এতে হাবিবের হাত কেটে যায়। ওই ঘটনায় হাবিব বাড্ডা থানায় মামলা করে।
ওই মামলায় পাভেল কিছুদিন কারাভোগ করে। পরে ঈদের আগে পাভেল জেল থেকে বের হয়ে আসলে হাবিব তাকে হত্যার হুমকি দেয়। ওই ঘটনার জের ধরে আসামি হাবিব ও তার দুই ভাই আনিস-সোহেলসহ অন্যরা ১৪ এপ্রিল পলস্নবীর স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকায় পুকুর পাড়ে নিয়ে ছুরি-চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে পাভেলকে হত্যা করে।
হারুন বলেন, হত্যার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হাবিব ও পাভেলের এক বন্ধু ঘুরার কথা বলে পাভেলকে মোটরসাইকেলে করে মিরপুরের পলস্নবী এলাকায় নিয়ে যায়। পরে আসামিরা ছুরি-চাপাতি দিয়ে প্রায় ৪৫ বার পাভেলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।
এঘটনায় নিহত পাভেলের মা পারুল বেগম পলস্নবী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি মিরপুর বিভাগ কাজ করে।