রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ক্যাফে সেলিব্রিটা বারের সামনে মদপানে কয়েকজন নারীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তাররা হলেন- শারমিন আক্তার মিম, ফাহিমা ইসলাম তুরিন এবং নুসরাত আফরিন।
ডিবি জানায়, মারামারির ঘটনায় গ্রেপ্তার নারীদের মদপানের লাইসেন্স ছিল না। তারা অবৈধভাবে অতিরিক্ত মদপান করে মাতাল হয়ে মারামারিতে জড়ান। সেলিব্রিটা বার নারীদের কাছে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করেছিল। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার বিকালে রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, মদপানের জন্য কোনো পুরুষ বা নারীর লাইসেন্স থাকলে বৈধ বার থেকে মদপান করতে পারেন। এতে আইনগত কোনো বাধা নেই। কিন্তু গত পহেলা বৈশাখের রাতে গুলশানের মতো একটি অভিজাত এলাকায় তারা মদপান করেন, যাদের কারও লাইসেন্স ছিল না।
তিনি আরও বলেন, লাইসেন্সহীন কারও কাছে বার কর্তৃপক্ষ মদ বিক্রি করতে পারে না। তাদের উচিত ছিল, ওই নারীদের মদপানের লাইসেন্স পরীক্ষা করা। এমনকি তাদের কাছে অতিরিক্ত পরিমাণে মদ বিক্রি করা হয়েছিল, যা পান করে মাতাল হন।
হারুন বলেন, বারের লোকজনের উচিত ছিল, বেসামাল নারীদের নিয়ন্ত্রণ করা। এই নারীরা বার থেকে বের হয়ে রাস্তায় গিয়ে প্রকাশ্যে মারামারিতে জড়ান, যা গুলশানের বাসিন্দারা দেখেন। তারা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। শহরের রাস্তায় নারীরা মাতলামি করবেন, মারামারি করবেন, এটি কোনো অভিভাবকই মেনে নিতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, এই নারীরা কারও না কারও সন্তান। তাদের অভিভাবকদের উচিত, মেয়েরা কোথায় যায়, কী করে, সেদিকে খেয়াল রাখা। আজ এই নারীরা বারে গিয়ে মদপান করে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। যে মেয়েকে তারা মারেন, সেই মেয়েও মাতাল ছিলেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে বার লাইসেন্স ছাড়া মদ বিক্রি করেছে, সেটির বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব।
এ সময় ভুক্তভোগী নারী রিতা আক্তার সুস্মি বলেন, আমি ও আমার এক বন্ধু মিলে খাবার খেতে ওই রেস্তোরাঁয় যাই। একপর্যায়ে টয়লেটে যাওয়ার জন্য গিয়ে দেখি চারজন মেয়ে এক সঙ্গে টয়লেটে প্রবেশ করছেন। বিষয়টি রেস্তোরাঁর ম্যানেজারকে বলি। তিনি মেয়েদের বের করে দেন। পরে আমি রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়ার সময় তারা আমার ওপর হামলা করেন।
রিতা আক্তার সুস্মি আরও বলেন, তারা আমাকে চড়-থাপ্পড় দিতে পারত। কিন্তু রাস্তার মধ্যে আমার কাপড় খুলে ফেলেন, আমাকে মারধর করেন। আমি তাদের সঠিক বিচার চাই। কারণ, রাস্তায় একজন মেয়ে আরেকজন মেয়ের কাপড় খুলে ফেলতে পারেন না।