দলীয় 'কোন্দল সামাল দিতে' আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে 'একক' প্রার্থী দেওয়ার দাবি করলেও বিএনপিবিহীন ভোট 'জমাতে' সে পথে যায়নি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে 'নানা বিবেচনায়' পাহাড়ে তার ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
যেহেতু পার্বত্য তিন জেলায় আঞ্চলিক দলগুলো নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, ফলে স্থানীয় নেতারা মনে করছেন, সেখানে নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত করে না দিয়ে, 'আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে একক প্রার্থী' দেওয়াই সমীচীন।
পার্বত্য তিন জেলার নেতারা দাবি করেছেন, তারা 'বিরাজমান বাস্তবতায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে' এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন এবং 'মৌখিক অনুমতি'ও পেয়েছেন।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর বলেন, 'কেন্দ্র আমাদের জানিয়ে দিয়েছে, প্রতিটি উপজেলায় একজন প্রার্থী রাখার চেষ্টা করবে জেলা কমিটি।'
তবে যারা এরই মধ্যে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে প্রার্থী হওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন, তারা শেষ পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলে পাহাড়ে এ ভোটকে কেন্দ্র করে দলীয় কোন্দল 'নতুন মাত্রা' পেতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
পাহাড়ের রাজনীতি নিয়ে কাজ করছেন এমন অনেকেই বলছেন, এখানে আঞ্চলিক দলগুলো শক্তিশালী, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। ফলে এখানে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী না দিলে সেই সুবিধা আঞ্চলিক দলগুলো পাবে। সে ক্ষেত্রে একক প্রার্থীর 'ফর্মুলা' পাহাড়ের জন্য 'ভালো দাওয়াই' হতে পারে।
কিন্তু প্রতিটি উপজেলাতেই তিন-চারজন করে প্রার্থী আছেন। সেটা সামাল দিতে না পারলে বিপদ বাড়বে আওয়ামী লীগের। কারণ, পাহাড়ি দলগুলোতে সাধারণত ভোটে 'বিদ্রোহী' হওয়ার প্রবণতা দেখা যায় না।
বিএনপিবিহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের 'নাজুক উপস্থিতির' পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ জানিয়েছিল, তারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেবে না। 'ভোট জমাতে ও দলীয় বিভেদ এড়াতে' প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকবে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও কুমিলস্না সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে কাউকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতারা সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছেন।
সেদিন দেশের আর বেশ কিছু পৌরসভায় মেয়র পদেও ভোট হয়েছে। তারাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই লড়েছেন। সার্বিকভাবে ভোটের হার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে বেশি ছিল। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলেছিলেন, 'পাইলটিং' প্রক্রিয়ায় ভোটের যে হার হয়েছে তাতে তারা 'খুশি'।
এ অবস্থার মধ্যেই সারাদেশে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রস্তুতি নিয়েছেন। তারা মনে করছেন, যেহেতু দলীয় প্রতীক থাকবে না এবং যে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন ফলে সেভাবেই তারা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ ও প্রচার চালিয়েছেন।
মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে জেলা পর্যায়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। সেখানে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
পাশাপাশি বলা হয়েছে, 'আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনগণের মতামতের সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটবে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে নিজেদের ভোট প্রদান করবে। নির্বাচনে কোনো প্রকার অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বিনষ্ট করার কর্মকান্ডে জড়িত না থাকার জন্য মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য ও নেতাকর্মীদের প্রতি সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।'
গত ৭ জানুয়ারির ভোটে 'সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ না থাকা' কিংবা 'একদলীয় অগণতান্ত্রিক নির্বাচন বর্জনের' আওয়াজ তুলে সংসদ নির্বাচন থেকে দূরে থেকেছিল পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলো।
তবে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান-এ তিন পার্বত্য জেলার ২৭টি উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাশাপাশি পাহাড়ের এই চার রাজনৈতিক দলের বেশ ভালো সাংগঠনিক শক্তি থাকায় স্থানীয় এ ভোটে তারা খালি মাঠ ছেড়ে দিতে চায় না।
পাহাড়ে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস), পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা), প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক) নেতারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
দলীয়ভাবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না থাকায় তারা আগের মতোই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান চার আঞ্চলিক দলের বাইরে তিন পার্বত্য জেলায় আরও সক্রিয় রয়েছে দুই সশস্ত্র আঞ্চলিক দল কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ; যা পাহাড়ে 'বম পার্টি' নামে পরিচিত এবং 'মগ পার্টি'। তবে নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণের ইতিহাস নেই এ দুই দলের। কোথাও কোথাও অবশ্য ভোটের সময় তাদের প্রভাব থাকে।
বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে সব ধরনের ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। অবশ্য কোথাও কোথাও দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা আলোচনা রয়েছে। জামায়াত নেতারা ভোটে থাকছেন, এমন আভাসও মিলছে।
কোন ধাপে কোথায় ভোট: এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চার ধাপে করতে চায় নির্বাচন কমিশন; প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে।
এরপর ২৩ ও ২৯ মে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ এবং ৫ জুন শেষ ধাপের ভোট হবে। চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে হবে নির্বাচন।
প্রথম ধাপে ৮ মে পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলাগুলো হলো- রাঙামাটির সদর উপজেলা, কাউখালী, জুরাছড়ি ও বরকল; খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, লক্ষ্ণীছড়ি, রামগড় ও মাটিরাঙ্গা; বান্দরবানের সদর উপজেলা, রোয়াংছড়ি, থানছি ও আলীকদম উপজেলা।
দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মে হবে নয় উপজেলায় নির্বাচন। সেগুলো হচ্ছে- খাগড়াছড়ির সদর, দিঘিনালা ও পানছড়ি; রাঙামাটির কাপ্তাই, বিলাইছড়ি ও রাজস্থলী এবং বান্দরবানের রুমা, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা।
'পাহাড়ের বাস্তবতা ভিন্ন': পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলো নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেওয়ার পর ভোটের মাঠের পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টে গেছে। এখানকার নির্বাচন যে, সারাদেশের মত 'ম্যাড়ম্যাড়ে', একতরফা, বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হচ্ছে না, তা এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে। সবার অভিমত, এখানে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবে পাহাড়ি দলগুলো।
এসব বিষয় কেন্দ্রের কাছে ব্যাখ্যা করে 'একক প্রার্থীর ব্যাপারে মৌখিক সম্মতি' পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের এই সদস্য বলেন, 'সারাদেশে হয়ত নিজেদের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই আমাদের কেউ না কেউ বিজয়ী হবেন। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা ভিন্ন। এখানকার নির্বাচনে আঞ্চলিক দলগুলো বরাবরই একটি বড় শক্তি। তারা যদি নির্বাচন করে এবং আমাদের যদি একাধিক প্রার্থী থাকে, তবে বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে। তাই আমরা কেন্দ্রের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। কেন্দ্রও আমাদের জানিয়ে দিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায়, জেলা কমিটি চেষ্টা করবে প্রতিটি উপজেলাতেই একজন প্রার্থী রাখার।'
জেলা আওয়ামী লীগ সে অনুযায়ী এগোচ্ছে জানিয়ে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, 'আশা করছি, প্রায় উপজেলাতেই আমাদের একক প্রার্থীই থাকবে।'
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, 'আমরা কেন্দ্রকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারাও আমাদের মৌখিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, পার্বত্য এলাকায় দলের সমর্থিত প্রার্থী যেন একজন হয় এবং বিজয়ী হওয়ার পথ সুগম থাকে। আমরা সবভাবেই চেষ্টা করব আমাদের একজন প্রার্থী রাখার। তবে কাউকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হবে না কিংবা বসে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হবে না। সবকিছুই করা হবে আলোচনার ভিত্তিতে।'
কৌশলগত কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে এবং এটা নেওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু নেই বলে মনে করছেন বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর।
সদর উপজেলা পরিষদের এই চেয়ারম্যান বলেন, 'সারাদেশের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা ভিন্ন। কেন্দ্র থেকেও আমাদের এই ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হয়েছে।'
'নতুন কাহিনী': বিভিন্ন উপজেলায় যারা কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন 'একক প্রার্থী'র বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বলছেন, এটা জেলা নেতাদের 'নতুন কাহিনী'।
রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে অনেকদিন ধরেই কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মাঠ গোছাচ্ছেন মো. শাহজাহান। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলছিলেন, 'কেন্দ্র থেকে এরই মধ্যে সারাদেশের জন্য যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেটাই তো দলীয় নির্দেশনা। এখন কেউ কেন্দ্রের নাম ভাঙিয়ে কাউকে একক প্রার্থী করবে কী করে? আর এই সিদ্ধান্ত যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় পরিবর্তন করা হয়, তবে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার আগে যেন অবশ্যই তার মাঠের জনপ্রিয়তা ও অবস্থান যাচাই করা হয়। নইলে হিতে-বিপরীত হবে। ব্যক্তিগত পছন্দে যেন কেউ দলের প্রার্থী না হয়, সেটা আগে নিশ্চিত করতে হবে।'
সদর উপজেলা থেকেই প্রার্থী হতে চান জেলা যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিপস্নব চাকমা। তিনি জেলা আওয়ামী লীগেরও সদস্য।
'একক প্রার্থীর' ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কেন্দ্র তো জানিয়েই দিয়েছে, কোথাও দলের সরাসরি কোনো প্রার্থী থাকবে না। এখন তারা এখানে নতুন নিয়ম চালু করলে তো হবে না। সবাইকে কেন্দ্রের নির্দেশনাই মানতে হবে। দলের নির্দেশনা জেনেই আমি প্রার্থী হয়েছি, এখন তারা যা মন চায় করুক, আমি প্রার্থী হিসেবে শেষ পর্যন্ত মাঠেই থাকব।'
বিপস্নব চাকমার মতোই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের ব্যাপারে অনড় লংগদু উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মীর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ঝান্টু।
উপজেলা আওয়ামী লীগের এ সহ-সভাপতি বলেন, 'কেন্দ্রীয় নেতারা যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেটা আমরা পড়েছি, প্রতিদিন গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা শুনছি, দেখছি। এখন জেলার নেতারা নতুন কাহিনী করলে তো হবে না। যতক্ষণ তারা আমাদের কেন্দ্রের চিঠি দেখাতে পারবে না, ততক্ষণ অবধি এটা আমরা মানব না। নির্বাচন করতে নেমেছি, নির্বাচন করবই, যদি বেঁচে থাকি।'
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম বলেন, 'এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমি এখনো জানি না। আমি নির্বাচন করতেই মাঠে নেমেছি, নির্বাচন আমি করব। তবে আমার দল, আমার নেত্রী শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যদি এইরকম কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তবে অবশ্যই আমি সেই সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকব।'
'বলার কিছু নেই': আওয়ামী লীগ নেতারা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনেই বলছেন, উপজেলা নির্বাচনে সারাদেশে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো প্রার্থী দেওয়া হবে না। ফলে কেউ দলীয় প্রতীকও পাবেন না। তবে জেলা নেতারা একত্রিত হয়ে পাহাড়ে 'একক প্রার্থী' ঠিক করলে কিছু বলার থাকবে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, 'আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা দলীয় কোনো প্রার্থী দেব না। সেই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে পাহাড়ি অঞ্চল হোক আর যেখানেই হোক আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেবে না।'
পরিস্থিতি বিবেচনায় পাহাড়ের নেতারা যদি একক প্রার্থী চান তাহলে দলের অবস্থান কী হবে- এমন প্রশ্নে আব্দুর রহমান বলেন, 'আমি আগেই বলেছি, আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো প্রার্থী দেব না। তবে স্থানীয়ভাবে যদি আওয়ামী লীগ নেতারা একত্রিত হয়ে পাহাড়ি অঞ্চলে একক প্রার্থী ঠিক করে সেই ক্ষেত্রে আমাদের তো আর কিছু বলার থাকে না বা থাকবে না।'
কোনো উপজেলায় বিএনপি কিংবা জামায়াতে ইসলামের প্রার্থী থাকলে সে ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগ কী করবে জানতে চাইলে আব্দুর রহমান বলেন, 'আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো একক প্রার্থীকে সমর্থন দেব না। স্থানীয় সবাই মিলে একজন দিলে তখন তো আর করার কিছু থাকবে না।'
আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, 'আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেবে না। এই সিদ্ধান্ত অনেক আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্বত্য এলাকাও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে, সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে স্থানীয় নেতারা নিজেরা বসে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাউকে নিয়ে নির্বাচন করতে পারেন। তবে, তাকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচার করা বা পরিচয় দেওয়া যাবে না এবং স্থানীয় সিদ্ধান্ত মানতে কোনো নেতাকর্মীকে বাধ্য করা যাবে না। কেউ এমন সিদ্ধান্ত না মানলে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।' সূত্র: বিডিনিউজ