বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃতু্য আশঙ্কাজনকহারে বাড়লেও তা মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ খুবই কম। এজন্য আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার বিশ্বস্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত 'অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত' শীর্ষক ওয়েবিনারে এ দাবি জাননা তারা।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, সাধারণভাবে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণ গ্রহণ, তামাকের ব্যবহার, কায়িক শ্রমের অভাব, বায়ুদূষণ প্রভৃতি কারণে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, কিডনি রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে, যা বর্তমানে দেশে মোট মৃতু্যর প্রায় ৭০ শতাংশ। তবে এসব রোগ মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দ খুবই সামান্য, মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
ওয়েবিনারে আরো জানানো হয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জাতীয় বাজেটের অন্তত ১৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দিলেও, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে এ খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেট বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নওএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে কম।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, কেবল উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানোর মাধ্যমেই অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আসন্ন বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের মধ্যে লবণ গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে।
জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে উচ্চ রক্তচাপের পরীক্ষা ও ওষুধের পেছনে ১ টাকা ব্যয় করলে সামগ্রিকভাবে ১৮ টাকার সুফল পাওয়া সম্ভব। কাজেই জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক ড. লায়লা আখতার। ওয়েবিনারে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞার সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা।