পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সদরঘাটের চিরায়ত চিত্র বদলে গেছে এবং এখানে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। আগামীদিনে সদরঘাট আরও ফিটফাট হবে বলেও তিনি জানান।
শুক্রবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শনকালে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সদরঘাটের চিরায়ত চিত্র বদলে গেছে। এখানে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে এটা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। আগে স্পিড বোটে শ্যামপুর থেকে সদরঘাটে আসতে হয়েছে। আমি সরাসরি রাস্তা দিয়ে এখানে আসতে পারিনি। কারণ গোলাপ শাহ্ মাজার থেকে এ পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে যেত। এখন পদ্মা সেতুর কারণে সেই শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। মানুষের মধ্যে আনন্দ দেখতে পাচ্ছি, তারা স্বাভাবিকভাবে লঞ্চে চলাচল করতে পারছে, কোনো ধাক্কাধাক্কি নেই।
আগে দেখতাম লঞ্চে জায়গা নেওয়ার জন্য রাত ৮টায় লঞ্চে ছেড়ে যাবে কিন্তু যাত্রীরা সকাল বেলা এসে লঞ্চে বসে থাকত দুপুরের খাওয়া দাওয়া নিয়ে। বর্তমানে সেই অবস্থাটা নেই। আস্তে আস্তে এই পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের কাছে একটা লোভনীয় ছবি ছিল, যে পুরো লঞ্চ থেকে ছাদ পর্যন্ত শুধু মানুষ আর মানুষ। এ ছবি কিন্তু এখন আর পাওয়া যাবে না। বৃহস্পতিবার আমি ফেসবুকে একটা ছবি দেখছিলাম বললাম এটা এখন একটা ইতিহাস এটা আর ফিরে আসবে না।
তিনি আরও বলেন, সদরঘাটের কর্মীরা আগে ঘুমাতে পারত না এখন একটু স্বস্তিতে আছে। নতুন নতুন পন্টুন ও গ্যাংওয়ে দেওয়া হয়েছে, পরিবেশ ধরে রাখার জন্য অনেক লঞ্চ মালিকের ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করেছে। কারণ এ জায়গায় ভালো সার্ভিস দিতে না পারলে মানুষ বিমুখ হয়ে যাবে। পরিবেশ ভালো আছে আমাদের লোকজন যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। যাত্রী সাধারণকে সেবা দেওয়ার জন্য এ প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। মেট্রোরেলের সুবিধা পুরান ঢাকাবাসীও পাবে। মাল্টিমোডাল কানেকটিভিটির বিষয়ে ১৯৯৬ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন। পাঁচ বছরে তেমন কিছু করতে না পারলেও বিগত ১৫ বছরে তিনি বাংলাদেশকে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উপহার দিয়েছেন। সদরঘাটের সঙ্গে মেট্রোরেলের কানেকশন হয় সে বিষয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। ঢাকা শহরে বসবাসকারী দক্ষিণঞ্চালবাসীও মেট্রোরেলে করে সদরঘাট আসতে পারবে। এটা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পাবে। সমন্বিত উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। সদরঘাটও এ সুবিধা পাবে। আগামী দিনে সদরঘাট আরও ফিটফাট হবে।
এ সময় বিআইডবিস্নউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তাফা, নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
পরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সদরঘাটে নৌযান ও ঘাট কর্মীদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করেন।