তারেক নেতৃত্বে থাকলে বিএনপি ভুলের চোরাবালিতেই থাকবে

মতবিনিময় সভায় ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ | ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের -ফোকাস বাংলা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলটির জন্য অভিশাপ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'লন্ডন থেকে যার হুকুমে বিএনপি চলে, তার ফ্রি-স্টাইল নেতৃত্ব এখন বিএনপি নেতাদের মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তারা বুঝতে শুরু করেছে, তারেক রহমান যত দিন নেতৃত্বে আছে, তত দিন বিএনপি ভুলের চোরাবালিতে আটকে আছে। এখান থেকে তারা আর বের হতে পারবে না।' খুলনা বিভাগীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। তারেক রহমানের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'রাজনীতি করবে রিমোট কন্ট্রোলে, এটা কি হয়! সাহস থাকলে দেশে আসুন, রাজনীতি করুন। জেলে যাওয়ার সাহস রাখুন। লন্ডন থেকে ডাকে জনগণ সাড়া দেবে না।' তিনি বলেন, 'আজকে বিএনপি নেতারাও এই আন্দোলনের ডাককে ভুয়া বলে। এই বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ। ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েও ব্যর্থ। বিএনপি নেতাদের শোবার ঘরে, রান্নাঘরে ভারতীয় পণ্য। তথাকথিত ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক ভাঁওতাবাজি। এই ভাঁওতাবাজির অবসান হয়েছে। আজকে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি দিশাহারা।' বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই একমাত্র গণতন্ত্রের চর্চা করে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপির নিজেদের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই। যাদের নিজের ঘরেই গণতন্ত্র নেই, তারা দেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে কোন মুখে? '৭৫-এর নৃশংসতম ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হন্তারক। গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা গণতন্ত্রের নামে মায়াকান্না করে। শুনেও হাসি পায় বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে।' বিএনপির ৮০ ভাগ নেতা-কর্মী নির্যাতনের শিকার বলে সম্প্রতি দলটির মহাসচিব যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'মির্জা ফখরুল কথায় কথায় চোখের জল ফেলেন। ৮০ শতাংশ নেতা-কর্মী নাকি নির্যাতন ও জেলে বন্দি। বলেন কোন কারাগারে তারা বন্দি আছে? আমীর খসরু, মির্জা আব্বাস সবাই তো একে একে বাইরে। তালিকাটা প্রকাশ করুন। আর মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না।' বিএনপিপন্থি মুক্তিযোদ্ধারা ফ্রিডম ফাইটার বাই অ্যাকসিডেন্ট মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। আজকে সত্য ইতিহাস জানতে হবে। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে তারা মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ করে গণহত্যা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। আজকে তারা এখনো স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার ম্যান্ডেট জনগণ থেকে পেয়েছিলেন শুধু বঙ্গবন্ধু। সত্তরের নির্বাচনে একাত্তরের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার বৈধ ম্যান্ডেট শুধু বঙ্গবন্ধুই পেয়েছিলেন। কাজেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার অন্য কারও ছিল না।' আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুলস্নাহর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ অন্য নেতারা। এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভাতে যোগ দেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত এই সভায় তিনি মফস্বলের হাসপাতালগুলোর মান উন্নত করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, 'দেশের মফস্বলের কোনো কোনো হাসপাতাল দেখে মনে হয় যেন আস্তাবল। হাসপাতাল যেন আস্তাবল না হয়। ডাক্তার আছে, ওষুধ নেই। আইসিইউর মতো জরুরি বিষয়টি উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত থাকা দরকার।' সেতুমন্ত্রী বলেন, সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। পদ্মার ওপারে একটি আধুনিক ও বড় হাসপাতাল করার প্রস্তাব আছে। ক্যানসার, কিডনিসহ কিছু কিছু জটিল রোগের জন্য বাইরে যেতে হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'স্বাস্থ্য খাতে দগদগে অবস্থা করোনা মহামারিতে দেখেছি। মূল জায়গায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা যদি সৎ হোন, দায়িত্ববোধ থাকে তাহলে অনেক কিছু করা যায়।' উপ-কমিটির চেয়ারম্যান আ ফ ম রুহুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানাসহ উপ-কমিটির সদস্যরা। পরে দেশের ৫টি হাসপাতালে উপ-কমিটির পক্ষ থেকে হুইলচেয়ার বিতরণ করা হয়।