বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি
সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত চায় ছাত্রদল
প্রকাশ | ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতি-বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বিএনপির এই ছাত্র সংগঠনটির দাবি, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু করতে হলে সব রাজনৈতিক সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসে ও হলে সব রাজনৈতিক সংগঠনকে অবাধে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দিতে হবে।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে 'বুয়েট সংকট :সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবি'তে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন।
বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে, নাকি ছাত্রলীগের বিপক্ষে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রকিব বলেন, 'বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে স্স্নোগান দিচ্ছে 'ছাত্রলীগের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও', 'ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হুঁশিয়ার সাবধান'; আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন শিক্ষার্থীদের সব সেস্নাগান কিন্তু ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। তারা কিন্তু অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে স্স্নোগান দেয় না।'
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে রাকিবুল ইসলাম রকিব বলেন, 'বুয়েটের পরিস্থিতি ছাত্রদল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ছাত্রদল মনে করে, ছাত্রলীগের প্রাণঘাতী নির্যাতন থেকে নিস্তার পেতেই বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আবরার ফাহাদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে খুন করার পরে মুষ্টিমেয় দুই-একজন বাদে বুয়েটের সব শিক্ষার্থী সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যদিও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে নিরাপত্তার অভাবে তারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা বলেছে।'
তিনি বলেন, 'ছাত্রদল মনে করে, বুয়েটের শিক্ষার্থীদের আপাতদৃষ্টিতে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে যে অবস্থান তার একক দায়ভার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। ছাত্রদলসহ কোনো গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের এই দুষ্কর্মের দায়ভার বহন করবে না।'
বুয়েটে ছাত্রলীগের কার্যক্রম চালুর পদক্ষেপ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'বুয়েটের শিক্ষার্থীরা এখন শঙ্কিত এই কারণে যে, ছাত্রলীগের কার্যক্রম পুনরায় চালু হলে তাদের পড়াশোনা এবং ক্লাস পরীক্ষা বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের মিছিল, মিটিং, গেস্টরুমে হাজিরা দিতে হবে। তাদের কর্মসূচিতে অংশ না নিলে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হবে। ছাত্রলীগের ক্যাডারদের বিরাগভাজন হলে হল থেকে বিতাড়িত করা হতে পারে। বুয়েটের প্রতিটি শিক্ষার্থী আতঙ্কিত, কারণ যে কোনো মুহূর্তে তাদের যে কারও জীবনে ছাত্রলীগের নির্যাতনে আবরারের মতো মর্মান্তিক পরিণতি নেমে আসতে পারে।'
আদালতের নির্দেশে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরছে, এখন ছাত্রদল কমিটি দেবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, 'বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি থাকবে কিনা তা নির্ধারণ করবে সেখানকার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এখন তারা যদি আমাদের স্বাগত জানায় তাহলে আমরা ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কর্মতৎপরতা বাড়াব।'
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউলস্নাহ আমান, দপ্তর সম্পাদক (সহসভাপতি) জাহাঙ্গীর প্রধান, প্রচার সম্পাদক শরীফ প্রধান শুভ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ।'