ঈশ্বরদীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

তাপমাত্রা ছাড়াতে পারে ৪২ ডিগ্রি, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চলতি এপ্রিলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র থেকে অতিতীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস বিশেষজ্ঞ কমিটি এ তথ্য জানিয়েছে। সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ছাদেকুল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন। দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে দেশে ৫ থেকে ৭ দিন বিক্ষিপ্তভাবে শিলাসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ হালকা বা মাঝারি ধরনের এবং এক থেকে তিন দিন তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু'টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলেও জানানো হয়েছে পূর্বাভাস প্রতিবেদনে। এতে আরও বলা হয়, এপ্রিল দেশে দুই থেকে চারটি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং এক থেকে দু'টি তীব্র (৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে অতি তীব্র (৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি সময়বিশেষ দ্রম্নত বাড়তে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তবে অন্যত্র, দেশের সব প্রধান নদ-নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ থাকতে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মার্চ মাসে সার্বিকভাবে সারাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। মার্চে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। একই সঙ্গে গড় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। ঈশ্বরদীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এদিকে পাবনার ঈশ্বরদীতে সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপপ্রবাহের কারণে পহেলা বৈশাখ ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের কেনাকাটায় ছেদ পড়েছে। গরমের তীব্রতায় রোজাদারদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। প্রখর রোদে ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে। গরমের তীব্রতায় পানি শূন্যতায়ও অসুস্থ হচ্ছেন কেউ কেউ। জরুরি কাজ না থাকলে মানুষজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। প্রাণিকূলও গরমের তীব্রতায় পড়েছে চরম বেকায়দায়। মাঝারি তাপদাহে কাতর মহিষের পাল একটু গা ভেজাতে পুকুরের পানিতে নামতে দেখা যায়। ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, ঈশ্বরদীতে এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার ঈশ্বরদীতে ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলেও একদিনের ব্যবধানে আজ এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়। অন্যদিকে শীতের রেশ কাটতে না কাটতেই রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করেছে। সোমবার বিকাল ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে রোববার সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। নগরীর আলুপট্টি এলাকার রিকশাচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'সূর্যের প্রচুর তাপ। ছাতা ছাড়া বাইরে বের হলেই শরীর পুড়তে থাকে।' রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রহিদুল ইসলাম বলেন, 'সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীর ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরও বাড়বে। এ সময়ের মধ্যে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে কোনো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে মাঝে মাঝে বৃষ্টি ছাড়াই কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।'