ঈদ বাজারকে ঘিরে সাতক্ষীরার কলারোয়া সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য পাচার হয়ে আসছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাতের বিভিন্ন সময়ে কলারোয়া সীমান্তের চোরাই পয়েন্ট দিয়ে ভারতীয় পণ্য প্রবেশ করছে। ডাঙ্গা সীমান্তে ভারতের তারকাটার বেড়া কেটে সে দেশের চোরাচালানিরা সব পণ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাচার করছে। এছাড়া পানি বর্ডারে ইছামতি ও সোনাই নদী সীমান্তে এসব পণ্য আনার জন্য বেশ কিছু নৌকা নিয়োজিত রয়েছে। ক্রেতারা সস্তা ও চাকচিক্যময় ভারতীয় পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহী হওয়ায় মার খাচ্ছে দেশীয় পণ্য। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
সূত্র মতে, কলারোয়া সীমান্তের কেড়াগাছির চারাবাড়ি ঘাট, কুটিবাড়ি ঘাট, রথখোলা ঘাট, গাড়াখালী ঘাট, সোনাবাড়িয়ার দক্ষিণ ভাদিয়ালী ঘাট, ভাদিয়ালী তেতুলতলা ঘাট, উত্তর ভাদিয়ালী কামারবাড়ি ঘাট, রাজপুর খা-বাগানের ঘাট, চান্দা সস্নুইস গেট ঘাট, উত্তর বড়ালী ঘাট, চন্দনপুরের হিজলদী ভদ্রশাল ঘাট, হিজলদী শিশুতলা ঘাট, সুলতানপুর ঘাট, সুলতানপুর তালসারি ঘাট, গোয়ালপাড়া ঘাট, চান্দুড়িয়া ঘাট, গাড়ালবাড়ি ঘাট, কাদপুর ঘাট দিয়ে ভারতীয় পণ্য পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসছে। এসব পণ্যের মধ্যে নারী-পুরুষের বাহারি পোশাক বেশি। এছাড়াও এর মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন, ছোলা, বুট, ব্যাসন, সায়াবিন বিট, আদা, লবণ, চিড়া, সুজি, জিরা, শাহী জিরা, গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি, জায়ফল, জয়ত্রী, আঙ্গুর, আপেল, কমলা, মালটা, নাশপাতি, বেদানা, কিশমিশ, চেরিফল, শার্ট পিস, প্যান্ট পিস, জিন্সের প্যান্ট ও শার্ট, রকমারি পাঞ্জাবি, থ্রিপিস, টুপিস, জর্জেট শাড়ি, ওড়না, গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া, শিশু পোশাক, বালিশের কভার, বেডশিট, তোয়ালে, সিট কাপড়, উন্নতমানের বোম্বে প্রিন্ট শাড়ি, সাউথ ইয়ান সিল্ক, কাতান, বেনারসি, আতর, সেন্ট, বডি লোশন, রকমারি ক্রিম, সেভিং লোশন, সেভিং ক্রিম, জুতা, স্যান্ডেল, হাড়ি, কড়াই, স্টিলের পেস্নট, গস্নাস, বাটি, গামলা, বালতি, কড়ির কাপ, পিরিচ, পেস্নট, ডিনার সেট, শিশু খেলনা, সেনেটারি ব্যাসিন, পাইপ, প্যান, বৈদু্যতিক বাল্বের ফিলামেন্ট, এলইডি বাল্ব, ফ্যান, ঘর ওয়ারিং সামগ্রী সস্নুইস, সিলিং রোজ, সকেট, নতুন ও পুরাতন সাইকেল, মোটর সাইকেল আসছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সীমান্ত খোলা থাকার সুযোগে ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, আফিম, চরস, ভাং, সিদ্ধি, প্যাথেড্রিন, ইয়াবাসহ নানা প্রকার যৌন উত্তেজক সামগ্রী পাচার হয়ে আসছে।
রাতে এসব পণ্য সীমান্ত সংলগ্ন নির্জন রাস্তায় ট্রাক, পিকআপ ও মাইক্রোবাসে ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া সীমান্তে পণ্য সরবরাহে আগত বিভিন্ন কোম্পানির ডেলিভারি ভ্যান ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ভরে এসব পণ্য দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
আবার মোটর সাইকেল, ইজিবাইক বা থ্রিহুইলারে ভরে এসব পণ্য বাগআচড়া বাজার, বাকড়া বাজার, কলারোয়া বাজার, কেশবপুর বাজার, রাজগঞ্জ বাজার, মনিরামপুর বাজার, নওয়াপাড়া বাজার, পাটকেলঘাট ও চুকনগর বাজারে নেওয়া হয়। এসব ভারতীয় পণ্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন হাট বাজার ও রাজধানী ঢাকায় পৌঁছে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কলারোয়ার মাদরা বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার আফজাল হোসেন বলেন, তার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অন্য এলাকা দিয়ে ভারতীয় পণ্য আসতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার ও এসিল্যান্ড রিফাতুল ইসলাম এ ব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লালটু বলেন, চোরাচালানের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।