ঈদ বাজার
ভিড় বাড়লেও বিক্রি কম
প্রকাশ | ২৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
রেজা মাহমুদ
ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ততা বেড়েছে নগরবাসীর। রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে। বিক্রেতারা বলছেন, সাধারণত রমজানের শেষ ২ সপ্তাহে ক্রেতাদের এমন চাপ থাকে কিন্তু এবার ১২ রমজানেই পরিস্থিতি তেমন হয়েছে।
এদিকে ক্রেতার ভিড় বাড়লেও বিক্রি তেমন বাড়েনি বলে জানিয়েছেন অনেক বিক্রেতারা। যদিও নামিদামি ও জনপ্রিয় বেশ কিছু ব্র্যান্ডের আউটলেটগুলোতে বিক্রি ভালো। তবে কাঙ্ক্ষিত বিক্রি নেই মাঝারি ও নতুন ব্র্যান্ডগুলোর। তারা বলেন, ক্রেতা আসছেন পণ্য দেখছেন কিন্তু কিনছেন খুবই কমসংখ্যক মানুষ।
গত শুক্র ও শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে সরেজমিন গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। শনিবার রীতিমতো লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতাদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে বসুন্ধরা শপিংমলে। শুধু তাই নয়, কিছু আউটলেটে এতই ভিড় ছিল সেখানে প্রবেশ করতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১০ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত। কিন্তু সে অনুপাতে বিক্রি নেই। একই মার্কেটে বিপরীত চিত্র ছিল ছোট ও নতুন পোশাকের দোকানগুলোতে। ক্রেতা চাপ না থাকায় অলস সময় পার করছেন দোকানিরা। তবে রমজানের শেষ ১০ দিনে পরিস্থিতি বদলাবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
এ সময় কথা হয় ক্রেতা সাইমুন জামানের সঙ্গে। তিনি ঈদের কেনাকাটা করতেই গাজীপুর থেকে এদিন ঢাকা এসেছেন। তাই পছন্দ অনুযায়ী পোশাক কেনা শেষে তিনি বাড়ি ফিরবেন। তবে সব ক্রেতা সাইমুনের মতো না। এদিন অনেকেই বন্ধু অথবা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই মার্কেটে এসেছেন, পছন্দ হলে কিনবে, নইলে অন্য কোথাও ঘুরে দেখবেন। এমনই একজন তানিয়া। তিনি বলেন, জুতা কিনবেন এসেছি, তবে শোরুমগুলোতে কেমন পোশাক বিক্রি হচ্ছে, দাম কেমন আর্থাৎ কি ট্রেন্ড চলছে তাই ঘুরে ঘুরে দেখছেন।
তবে অনেক ক্রেতাই বাড়তি দামের কারণে ইচ্ছা সত্ত্বেও বাজেট না মেলায় শুধু পাঞ্জাবি বা শার্ট কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। এমনই একজন মাহিন, তিনি বলেন, 'আমি জুতো আর পাঞ্জাবি কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু গত বছরের তুলনায় দাম বাড়তি থাকায় একটি পণ্য কিনেই ফিরতে হচ্ছে।' বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাঞ্জাবি ও জুতোর বিক্রয়কর্মীরা জানিয়েছেন, ৩ হাজার টাকার মূল্যের পণ্যে এবার বাড়তি ৪শ' থেকে ৫শ' টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। ধরন ও মানভেদে যা হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ক্যাটস আইয়ের একজন বিক্রেতা জানান, তাদের প্রিমিয়াম কোয়ালিটির শার্ট গত ঈদে ৩ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যেত, তবে এবার তা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার টাকার উপরে।
এর বাইরেও রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলোতে রকমারি পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা, ক্রেতাও আসছেন, তবে বিক্রি কম। শনিবার রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বিক্রেতাদের দাবি ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে ঠিকই তবে বিক্রি সেভাবে বাড়েনি। বেশিরভাগ ক্রেতাই দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন বলে দাবি দোকানিদের। তবে শিশুদের জন্য পোশাকের দোকানগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা চলতে দেখা গেছে। চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের চিত্রও একই। এখানকার বিক্রেতারা জানান বন্ধের দিন তাই ভিড় আছে তবে বেচা-বিক্রি নেই। এদিকে এসব দোকানের পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়তি।