জলাধার সুরক্ষায় ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়নের দাবি
প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
নদ-নদী, খাল বিল ও জলাধার সুরক্ষায় ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশ মুঠোফোনে গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন নামে দুটি সংগঠন।
শুক্রবার বিশ্ব পানি দিবসে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ ও বাংলাদেশ মুঠোফোনে গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে কর্মসূচির আয়োজন করে।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে পালিত হওয়া বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমরাও দিবসটি পালন করছি। আজকের প্রতিপাদ্য 'শান্তির জন্য পানি' যথার্থ হয়েছে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় একটি পরিবারকে প্রায় দুই ঘণ্টা হেঁটে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি লবণাক্ত হয়ে পড়েছে, ঢাকায় চারপাশের সব নদী আজ দূষিত। ঢাকা ওয়াসা যে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে সেই পানি অত্যন্ত দূষিত, ফলে এই পানি দূষণমুক্ত করতে ওয়াসার উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।
পদ্মার পানি এখনো পুরোপুরি দূষিত না হলেও সেই পানি খুব দ্রম্নতই দূষিত হয়ে পড়বে। এতে রাজধানীতে দৈনিক প্রায় ২২৬ কোটি লিটার সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। যার ফলে পানির সংকট দিন দিন বাড়তে থাকবে।
বক্তারা আরও বলেন, বলা হচ্ছে আগামী ২০৩০ সালে বিশ্বের পানির চাহিদা দাঁড়াবে বর্তমান চাহিদার চাইতে ৪০ শতাংশ বেশি। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ পানি কোথা থেকে আসবে, কিভাবে এই পানির চাহিদা পূরণ হবে তার সঠিক পরিকল্পনা এখনো নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং সকলের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে যা এসডিজির অন্যতম লক্ষ্য। জাতিসংঘের এক গবেষণায় উঠে এসেছে ৭৪ শতাংশ পানি সংগ্রহের জন্য কাজ করেন নারীরা। ৬৩ শতাংশ মানুষকে সুপেয় পানি পেতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
দেশের এখনো ৭৫% মানুষ টিউয়েলের ওপর নির্ভর করে তার মধ্যে অনেক এলাকায় আর্সেনিক যুক্ত পানি এবং অনেক এলাকায় পানি উঠছে না সেই টিউবয়েলে। বর্তমান দেশের ৪১টি জেলা আর্সেনিকের প্রভাব রয়েছে। বলা হচ্ছে দেশের মাত্র ৩৪ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি পায়। দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুপেয় পানি বড় সংকট তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের জলাভূমি দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে ঢাকার জলাভূমি সব দখল হয়ে গেছে ফলে রাজধানীর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে।
ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করে নদী ও জলাশয়ের প্রকৃতিগত ভৌগোলিক অবস্থান নির্ণয় করে রক্ষা করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা সরকারিভাবে ঘোষণা করতে হবে। নদী দখল এবং নদীর বালু নিয়ে যে বাণিজ্য শুরু হয়েছে সেখান সরকারকে কঠোর হস্তক্ষেপ করতে হবে।
তারা বলেন, ইতোমধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি ব্রহ্মপুত্র নদীর খনন করতে গিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির যে চিত্র উঠে এসেছে তার সঠিক তদন্ত করতে হবে। আমাদের সকল নদ-নদী খাল বিলকে দূষণমুক্ত করতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক হাসান মোহাম্মদ ইফতেখার, জলাধার রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি ইবনুল সাঈদ রানা, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের চেয়ারম্যান মো. জলিল, গ্রীন পার্টি চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ খান, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু প্রমুখ।