রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্য সেজে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার রাতে ধানমন্ডির ৫ নম্বর রোডের একটি রেস্তোরাঁ ও বিউটি পারলার থেকে এই দুই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। চাঁদাবাজির অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে দু'জনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মামলা হয়। এই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তারেক আজিজ (৪৫) ও তার সহযোগী আক্কাস আলী (৪৫)।
পুলিশের ধানমন্ডি অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আবু তালেব বলেন, পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে গতকাল দু'জনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, তারেক-আক্কাসসহ দুই থেকে তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাটি করেছেন সৈয়দা জেসমিন করিম নামের এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডের ২৯/এ নম্বর বাড়ির নিচতলায় তার রেস্তোরাঁ ও বিউটি পারলার আছে। ভবনের দোতলায় তিনি থাকেন। বুধবার এই রেস্তোরাঁ ও বিউটি পারলার থেকেই দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি ওয়াকিটকি, ডিবির জ্যাকেট সাদৃশ্য একটি পোশাক ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন লেখা একটি নোটবুক জব্দ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারেক ও আক্কাস তৃতীয় দফায় ধানমন্ডির রেস্তোরাঁটিতে ডিবি সেজে চাঁদাবাজি করতে যান। এ সময় রেস্তোরাঁ মালিক জেসমিনের পরামর্শে তার কর্মচারীরা দু'জনকে একটি কক্ষে আটকে ফেলেন। জেসমিন ধানমন্ডি থানা ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগে ফোন করে ঘটনা জানান। ধানমন্ডি থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দু'জনকে আটক করে।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, গত ১০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারেক-আক্কাস রেস্তোরাঁ ও বিউটি পারলারটিতে যান। তারেক নিজেকে ডিবির সদস্য বলে পরিচয় দেন। আক্কাস নিজেকে ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক বলে পরিচয় দেন। সেদিন তারা রেস্তোরাঁ ও বিউটি পারলারের লাইসেন্স দেখতে চান। সেগুলোর ছবি তুলে নেন।
একপর্যায়ে পারলারে ঢুকে ক্যাশ থেকে ৯০ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এরপর তারা জেসমিনের দ্বিতীয় তলার বাসায় তলস্নাশি চালান। জেসমিন তাদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তারা বলেন, পোশাক ও ওয়্যারলেস সেট দেখেই তো বোঝা যায়। তারেক-আক্কাস দ্বিতীয় দফায় ১২ মার্চ আবার রেস্তোরাঁটিতে যান। তারা জেসমিনের কাছ থেকে তার আইফোন কেড়ে নেন। বুধবার রাতে তারা আবার রেস্তোরাঁ ও বিউটি পারলারে চাঁদাবাজি করতে যান।
পুলিশের ধানমন্ডি অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আবু তালেব বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা প্রতারক, চাঁদাবাজ। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারেক নিজেকে আইনজীবী বলে পরিচয় দিচ্ছেন। রিমান্ডে নিয়ে দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। এ জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।