রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গত মঙ্গলবার, বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার ভোরেও বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে সাধারণত নগরীর বায়ুদূষণের মাত্রা কম থাকে। তারপরও বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে এদিন সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকার স্কোর ছিল ১৭২। বায়ুর এ মান অস্বাস্থ্যকর হিসেবে ধরা হয়। বুধবার ঢাকার অবস্থান ছিল পঞ্চম আর স্কোর ছিল ১৬৬।
বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক আইকিউএয়ারের সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে। আইকিউএয়ার মঙ্গলবার ২০২৩ সালের বিশ্বের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে দেখা যায়, বায়ুদূষণে গত বছর শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তান। আর রাজধানী শহর হিসেবে ঢাকার স্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। আর শীর্ষে ছিল ভারতের দিলিস্ন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বে বায়ুদূষণে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর ও নেপালের কাঠমান্ডু। শহর দুটির স্কোর ছিল যথাক্রমে ২০৫ ও ১৭৭।
আইকিউএয়ারের মানদন্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে 'মাঝারি' বা 'গ্রহণযোগ্য' মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর' ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা 'অস্বাস্থ্যকর' বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে 'দুর্যোগপূর্ণ' বা 'ঝুঁকিপূর্ণ' ধরা হয়।
আইকিউএয়ারের দেওয়া বৃহস্পতিবারের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষণের প্রধান উৎস। এদিন ঢাকার বাতাসে যতটা এই বস্তুকণা আছে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) মানদন্ডের চেয়ে ২২ গুণের বেশি।
ঢাকার বায়ুদূষণ থেকে বাঁচতে আইকিউএয়ার যে পরামর্শ দিয়েছে তার মধ্যে আছে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বাসার বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দূষণ থেকে রক্ষা পেতে ঘরের জানালা বন্ধ রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বায়ুদূষণ বেশি হলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে ভোগা মানুষেরা। তাদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।