পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'যারা এক-এগারোর কুশীলব ছিলেন তারা জাতিকে এখনও মাঝেমধ্যে জ্ঞান দেন। টেলিভিশনের পর্দায়, পত্রিকার পাতায় তারা এই জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন। গত নির্বাচনের আগেও তারা সক্রিয় হয়েছিল, যদি কিছু করা যায় সেই আশায়। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক কৌশলের কাছে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি যেমন পরাজিত হয়েছে, তেমনি এই কুশীলবদের স্বপ্নও ধূলিস্যাৎ হয়েছে।'
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিলস্নুর রহমানের ১১তম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। উক্ত সভার আয়োজন করে জিলস্নুর রহমান পরিষদ।
এক-এগারোর পরিবর্তনের পর দেশের গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দি করা হয়েছিল উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'গণতন্ত্রের পায়ে শেকল পরানো হয়েছিল। তখন জিলস্নুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার আন্দোলনে আমরা শামিল হয়েছিলাম। জনগণও আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা মুক্ত হয়েছিল, তা নয় আমাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও মুক্ত হয়েছিল। খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পরে তার পারসোনাল উইং থেকে ফোন করা হয়েছিল। আমাকে বলেছিল, চলেন একসঙ্গে কিছু করি। অর্থাৎ তারাও অসহায় হয়ে গিয়েছিল। এই অসহায়ত্ব থেকেই তারা ফোন করেছিল যাতে যুগপৎ আন্দোলনে করে ওই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ ঘটানো যায়।'
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিলস্নুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'জিলস্নুর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। চাপের মুখে এক-এগারো কঠিন সময় তিনি যেভাবে ধৈর্য সহকারে সবকিছু সামাল দিয়েছিলেন। তিনি দলকে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন তা অভাবনীয়।'
আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, জিলস্নুর রহমান লম্বা সময় ধরে জাতির পিতার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তার প্রতি বঙ্গবন্ধু এবং তার কন্যা শেখ হাসিনার অগাধ বিশ্বাস ছিল।
জিলস্নুর রহমান পরিষদের সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকি বলেন, জিলস্নুর রহমান এমন একজন মানুষ ছিলেন যিনি সবসময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে থেকে সমাজের কথা চিন্তা করেছে। তিনি তার জীবদ্দশায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দৃঢ়ভাবে অটল ছিলেন। সেনা শাসনের (১/১১) সময় জিলস্নুর রহমান বলেছিলেন 'শেখ হাসিনাকে ছাড়া আমরা নির্বাচনে যাবো না'। তার ওই বক্তব্যের পর কিন্তু সেনা শাসকরা বুঝতে পেরে ছিল শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচন সম্ভব না। ওই সময়ে তার ওইরকম বক্তব্য কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও জিলস্নুর রহমান পরিষদের সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান খোকার সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।