রাখাইনের ৫ গ্রামে রাতভর বিস্ফোরণ টেকনাফে আতঙ্ক
প্রকাশ | ২১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পাঁচটি গ্রামে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা থেকে শক্তিশালী গ্রেনেড-বোমা ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে। বুধবার ভোররাত পাঁচটা পর্যন্ত তা স্থায়ী ছিল। এ কারণে এপারে কক্সবাজারের টেকনাফের কয়েকটি গ্রামে কেঁপে কেঁপে ওঠে, দেখা দেয় আতঙ্ক।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, মংডু শহরের টাপউত্রাতরে নাকপুরা, বলিবাজার, পেরাংপ্রু, কাওয়ারবিল, সিকদারপাড়াতে থাকা সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) একাধিক সেক্টর ও সীমান্ত চৌকি দখলের জন্য হামলা চালিয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। আরাকান আর্মিকে রুখতে তাদের অবস্থানের ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী। তাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। অন্ধকার রাতে মর্টারশেল বিস্ফোরণের আগুনের শিখা এপারের লোকজন দেখতে পান।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, গতকাল রাত পৌনে ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এই কয়েক ঘণ্টায় থেমে থেমে অন্তত ৫০-৬০টি শক্তিশালী বিস্ফোরণ শুনতে পেয়েছেন এপারের লোকজন। এতে ঘরে ঘরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য নিয়ে আসা মিয়ানমারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, গত ছয়-সাত দিন ধরে আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপের দক্ষিণ-পূর্বের শহর রাচিডংয়ে হামলা বাড়িয়েছে।
পাশাপাশি মংডু শহরে রাতের বেলায় সরকারি অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে। মংডু থেকে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিথুয়ে (আকিয়াব) যাতায়াতের মধ্যখানে রাচিডং শহরের অবস্থান। গত রোববার রাতে তারা রাচিডং শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে। এখন পাশের বুচিডং শহরটি দখলের চেষ্টা করছে। তাতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষ বাড়ছে।
সম্প্রতি আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধে টিকতে না পেরে মংডু টাউনশিপের উত্তরের কয়েকটি সীমান্ত চৌকির ১৭৯ জন বিজিপি সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বুধবার সকাল সাতটা পর্যন্ত তাদের সবাই নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির হেফাজতে আছেন। ইতোমধ্যে তাদের পরিচয় শনাক্ত এবং ডেটাবেইস তৈরির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সাড়া পেলে তাদের যে কোনো মুহূর্তে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হতে পারে। এর আগেও পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রম্নয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।