নিজেরাই বাস উৎপাদন করবে বিআরটিসি

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস -ফাইল ছবি
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশনের (বিআরটিসি) বহরে বর্তমানে যাত্রীবাহী বাস রয়েছে ১ হাজার ৩৫০টি। এগুলো সুইডেন, জাপান, চীন, কোরিয়া ও ভারতের মতো দেশ থেকে কিনেছে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহণ সংস্থাটি। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৩৫০টি সিএনজিচালিত ও ভারত থেকে ১০০টি বিদু্যৎচালিত বাস সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বিআরটিসি চাইছে, আমদানি করা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সংযোজন করে নিজেরাই বাস উৎপাদন করতে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাথমিকভাবে চার-পাঁচটি বাস উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ কার্যক্রমের সফলতার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে বাস উৎপাদনের পরিধি বাড়ানো হবে। এ প্রসঙ্গে বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, 'চেসিস বানানোর সক্ষমতা এখনো আমাদের হয়নি। এই চেসিস বাদ দিয়ে পুরোপুরি একটি গাড়ি বানানোর শতভাগ সক্ষমতা বিআরটিসির রয়েছে। হয়তো আমরা প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে চেসিস নিতে পারি বা আমদানি করতে পারি। আমরা আগামী পর্ষদ সভায় (বিআরটিসির পরিচালনা পর্ষদ) এ সিদ্ধান্ত নেব। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর প্রাথমিকভাবে চার-পাঁচটি বাস তৈরির কাজ শুরু করব।' বিআরটিসির চেয়ারম্যান আরও জানান, ২০১২ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া গাজীপুরের সমন্বিত কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানা আবার চালু করা হয়েছে। পুরনো মেশিনারিজ পরিবর্তন করে নতুন মেশিনারিজ সরঞ্জাম যুক্ত কারখানার সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকার তেজগাঁওর কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানা আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এসব কারখানার কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হয়েছে। বিআরটিসির নিজস্ব কারখানায়, নিজস্ব কর্মীদের দিয়ে বাস তৈরির সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। এদিকে বর্তমানে বিআরটিসির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। এজন্য বাড়ানো হয়েছে গাড়ির সংখ্যাও। এতে একদিনে ১০ হাজার লোকের ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব। ফলে প্রশিক্ষণ আয় বেড়েছে। আগে ৬ হাজার টাকা দিয়েও যেখানে প্রশিক্ষণের জন্য লোক পাওয়া যেত না, সেখানে এখন ৮ হাজার টাকা দিয়েও প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিযোগিতা চলছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের স্বার্থে চেয়ারম্যান পদক চালু করা হয়েছে, এতে কাজের অগ্রগতি বেড়েছে। যারা যথাযথভাবে কাজ না করেও সবচেয়ে ভালো ছিল, তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ কর্মকর্তাও রয়েছেন। চালু করা হয়েছে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, যা তিন বছর পরপর দেওয়া হবে। কর্মচারীদের ছেলেমেয়েদের জন্য শিশুবৃত্তি চালু করা হয়েছে। গাড়ি বাড়ানোর সক্ষমতা যাচাইয়ে কাজ অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে বিআরটিসিকে দুর্নীতিমুক্ত করতেও ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সংস্থার চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের দাবি, আগে এ সংস্থার প্রায় শত শতাংশ দুর্নীতি হতো। এখন তা কমিয়ে ১০-১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। বিআরটিসির দুর্নীতি ধীরে ধীরে শূন্য শতাংশে নিয়ে আসবে বলে আশাবাদী তিনি। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ১ হাজার ৮২৫টি বাসের মধ্যে ৮৮৫টি বাস অনরুট ছিল। ২০২১ সালে ১ হাজার ৭৬২টি বাসের মধ্যে ১ হাজার ১০৬টি বাস অনরুট ছিল। ২০২২ সালে ১ হাজার ৩৫০টি বাসের মধ্যে ১ হাজার ২৩৩টি বাস অনরুটে ছিল। আর ২০২৩ সালে ১ হাজার ৩৫০টি বাসের মধ্যে ১ হাজার ২৫৩টি অনরুটে ছিল।