রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের গ্রম্নপ লিডারসহ ২০ সদস্যকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)-৩। তারা হলো-কিশোরগ্যাং 'ফয়েজ-আরাফাত' গ্রম্নপের ৭, 'সিয়াম' গ্রম্নপের ৪, 'অনিক' গ্রম্নপের ৪ ও 'কুনিপাড়া স্কোয়াড' গ্রম্নপের ৫ জন।
সোমবার দুপুরের্ যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, রোববার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানীর কদমতলী ও হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়।
কিশোরগ্যাংয়ের আটক সদস্যরা হলো- মো. ইয়াসিন আরাফাত (১৮), রাশেদ হাজারী (২২), মো. রাসেল ইসলাম (১৯), মো. তামিম মিয়া (২০), রাতুল হাসান (১৮), মমিনুল ইসলাম হৃদয় (২১), মো. রাকিব (২০), সাইফুল ইসলাম সিয়াম (১৯), আশিকুল ইসলাম স্বাধীন (১৯), মো. ফয়সাল হোসেন রাব্বি (২০), মো. নাঈম (১৯), মো. হাসান আহমেদ অনিক (২০), মো. আমিনুল ইসলাম (১৯), মো. রাফিন (১৮), মো. আল আমিন (১৮), মো. রনিউজ্জামান (২০), মো. রাকিব (২০), মোহন মিয়া (২২), মো. নাঈম মিয়া (২০) এবং নাহিদ (১৮)।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে ১টি চাপাতি, ১টি ছুরি, ১টি শাবল, ৩টি ছোরা, ১টি হাসুয়া, ৪টি চাকু, ২টি ক্ষুর, ২টি হেক্সোবেস্নড, ২৫ পুরিয়া গাঁজা, ৬টি মোবাইল এবং চাঁদা উত্তোলনের ৪ হাজার ৫৪০ উদ্ধার করা হয়।
র্
যাবের এ কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা জানায়, রাজধানীর শ্যামপুর ও কদমতলী এলাকায় ফয়েজ-আরাফাত কিশোরগ্যাং গ্রম্নপে প্রায় ১৫-২০ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। ফয়েজ-আরাফাত গ্রম্নপটি সন্ত্রাসী মো. ইয়াসিন আরাফাত ও তার ফুফাতো ভাই ফয়েজের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছিল। এর মধ্যে এ গ্রম্নপের অন্যতম হোতা আরাফাত এ অভিযানে আটক হয় এবং ফয়েজ বর্তমানে রিহ্যাব সেন্টারে আছে। আটক ফয়েজ-আরাফাত গ্রম্নপের সদস্যরা রাজধানীর শ্যামপুর ও কদমতলী এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, ইভটিজিং, মারধর, ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত।
এ ছাড়া হাতিরঝিল এলাকায় সিয়াম এবং অনিক গ্রম্নপ দুটি দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী সাইফুল ইসলাম সিয়াম এবং হাসান আহমেদ অনিকের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছে। তারা রাজধানীর হাতিরঝিল এবং এর আশপাশের এলাকায় সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল দ্বারা বিকট শব্দ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করত। এ গ্রম্নপের সন্ত্রাসীরা পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারাল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রম্নত পালিয়ে যেত। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হাতিরঝিল এলাকাসহ আশপাশ এলাকায় দেশীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। এ ছাড়া তারা মাদক সেবনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিল।
তিনি আরও জানান, রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার কুনিপাড়া স্কোয়াড গ্রম্নপটি হাতিরঝিল ও এর আশপাশের এলাকায় হোতা রনিউজ্জামানের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছে। হোতা রনিউজ্জামান অনলাইনভিত্তিক অবৈধ বিটকয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। টেলিগ্রামে নোটকয়েন নামক ফিচার ব্যবহার করে বিটকয়েনের মাধমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা অনলাইন জুয়ারিদের সঙ্গে জুয়া খেলত। এ গ্রম্নপের সদস্যরা ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং বিভিন্ন মানুষকে হুমকি, মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম করে আসছে। এ ছাড়া তারা রনিউজ্জামানের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করত।
আটক কিশোরগ্যাং সদস্যরা পেশায় অটোরিকশা চালক, ভাঙারি ব্যবসায়ী, দিনমজুর, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণশ্রমিক, পুরনো মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা হলেও মূল পেশার আড়ালে তারা মূলত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল। আটকদের মধ্যে ১০ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতির চেষ্টা, অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায়, মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, দসু্যতা, অস্ত্র ও হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।