বৃদ্ধাকে খুন করে ছিনতাইয়ে দুই আসামির মৃতু্যদন্ড

প্রকাশ | ১১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কানের দুল, হাতের আংটি ও মোবাইল ছিনতাইয়ের জন্য এক বৃদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় দুই আসামির মৃতু্যদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। চট্টগ্রামের ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনীরা রোববার এই রায় ঘোষণা করেন। দন্ডিত দুজন হলেন- মো. রুবেল (২৭) ও মো. আব্বাস (৩০)। তাদের মধ্যে রুবেল পলাতক। আর আব্বাসকে রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভোলা জেলার দৌলতখান থানার চর খলিফা গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে রুবেল চট্টগ্রাম শহরের অভয়মিত্র ঘাটের কর্ণফুলী কলোনিতে থাকতেন। আর চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার মোহছেন আউলিয়া গ্রামের নুর ছফার ছেলে আব্বাস ছিলেন নগরীর সদরঘাট থানার আলকরণ এক নম্বর গলির বেলাল কলোনির বাসিন্দা। আদালতের অতিরিক্ত পিপি দীর্ঘতম বড়ুয়া বলেন, 'হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় দুই আসামিকে মৃতু্যদন্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে দুজনকে।' এছাড়া লাশ গুমের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১ ধারায় দুই আসামিকে তিন বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় ছিনিয়ে নেওয়া স্বর্ণালংকারের ক্রেতা ফরহাদ হোসেনকে মামলা থেকে খালাস দিয়েছে আদালত। ২০১৮ সালের ২৫ মে সকালে নগরীর সদরঘাট থানার নেভাল-২ এলাকায় হাঁটতে গিয়ে খুন হন মঞ্জু সেন নামের ৭৭ বছর বয়সি এক নারী। এরপর তার ছেলে এ মামলা করেন। আইনজীবী দীর্ঘতম বড়ুয়া বলেন, প্রতিদিনের মতো সকালে হাঁটতে বের হয়েছিলেন মঞ্জু সেন। তিনি সকালে হাঁটতে বের হলে পূজার জন্য ফুল তুলতেন। সেদিনও নেভাল-২ এলাকায় ফুল তুলতে গেলে রুবেল ও আব্বাস তাকে ধরে নিয়ে প্যাসিফিক গ্রম্নপের একটি পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে মাথায় আঘাত করে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর কাঁথা মুড়ি দিয়ে তারা লাশটি ঝোঁপের আড়ালে ফেলে দেয়। আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। মঞ্জু সেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার মির্জারহাট বাজার গ্রামের মৃত মানিক চন্দ্র সেনের স্ত্রী। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার শিব বাড়ি লেইন এলাকায় কাদের দোভাষের ভবনে ভাড়া থাকতেন। মামলার নথি থেকে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো ২০১৮ সালের ২৫ মে সকাল ৬টায় অভিয়মিত্র ঘাট নেভাল-২ এলাকায় প্রাতঃভ্রমণে যান মঞ্জু সেন। প্রতিদিন তিনি সকাল ৮টায় বাসায় ফিরলেও সেদিন ফেরেননি। সেদিন সকাল ৯টায় তার মোবাইলে ফোন করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজাখুঁজি করে মঞ্জু সেনের সন্ধান না পেয়ে সেদিনই কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন তার ছেলে রতন কান্তি সেন। মায়ের সন্ধান চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দেন। পরদিন ২৬ মে দুপুর ২টায় নেভাল-২ এলাকায় প্যাসিফিক গ্রম্নপের একটি পরিত্যক্ত ভবনের পাশে ঝোঁপের মধ্যে একজনের লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মঞ্জু সেনের পরিবারের সদস্যরা। পরে তারা লাশ শনাক্ত করেন। মঞ্জু সেনের মুখ, নাক, কান, পিঠ ও হাতে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তারা। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ রুবেল ও আব্বাসকে আটক করে। রুবেলের কাছ থেকে পরিত্যক্ত ওই ভবনে প্রবেশ ফটকের তিনটি চাবি উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল ও আব্বাস খুনের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে।