সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন

দুই দিন ধরে শান্তিপূর্ণ ভোটের পরও 'আটকে আছে' ফল

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দুই দিন ধরে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের হট্টগোল, হাতাহাতির পর ঝুলে গেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিম কোর্ট বার) নির্বাচনের ফল। গত বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ভোট বৃহস্পতিবার বিকালে শেষ হলেও শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। থমথমে অবস্থার মধ্যে আদালত প্রাঙ্গণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ দেখা গেলেও দেখা যায়নি কোনো প্রার্থীকে। ফলে কখন ভোট গণনা করে ফলাফল ঘোষণা করা হবে তা জানা যায়নি। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে। দুই দিন ভোটগ্রহণের পর ওইদিন রাত ১০টার গণনাও শুরু হয়েছিল। সে সময় বিএনপি-জামায়াতপন্থি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী এবং সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী রাতেই ভোট গণনা শেষ করে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানাতে থাকেন। কিন্তু সরকার সমর্থক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ মনোনীত প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়া শাহ মঞ্জুরুল হকসহ অন্য প্রার্থীরা শুক্রবার বিকালে ভোট গণনার দাবি জানান। এই নিয়ে বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষ হট্টগোল এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাইদ একটি পক্ষের হাতে মারধরের শিকার হন। এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে রাতে আর ভোট গণনা হয়নি। শুক্রবার সকালে ভোট গণনা শুরু হলে সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তাই তাকে জয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন সাব কমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের। এ প্রসঙ্গে জানতে দুপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'কোনো ফল ঘোষণা হয়নি। শুক্রবার বিকালে গণনার কথা ছিল। কিন্তু গণনা এবং ঘোষণা হবে কিনা জানি না।' গত বছরের ১৫ ও ১৬ মার্চ সমিতির ২০২৩-২৪ মেয়াদের নির্বাচনেও ভাঙচুর, পুলিশের পিটুনি, হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির মধ্য দিয়ে ভোট হয়। ওই সময় বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা না দিয়ে নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি তোলেন। ওই নির্বাচনে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪টি পদের সবক'টিতেই জয় পান আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের আইনজীবীরা। এবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ মনোনীত প্যানেল থেকে সভাপতি পদে আবু সাঈদ সাগর, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, সহ-সভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, সহ-সম্পাদক পদে মো. হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হুমায়ন কবির প্রার্থী হয়েছেন। এই প্যানেল থেকে সাতটি সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, মাহমুদা আফরোজ, মো. বেলাল হোসেন, খালেদ মোশাররফ, মো. রায়হান রনি, সৌমিত্র সরদার ও রাশেদুল হক খোকন। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন সভাপতি পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক পদে মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, সহ-সভাপতি পদে মো. হুমায়ুন কবির ও সরকার তাহমিনা বেগম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. রেজাউল করিম, সহ-সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান ও মো. আব্দুল করিম। সাতটি সদস্য পদে আছেন ফাতিমা আক্তার, সৈয়দ ফজলে এলাহী, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. রাসেল আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, মহিউদ্দিন হানিফ ও মো. ইব্রাহিম খলিল। এই দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে মো. ইউনুছ আলী আকন্দ ও মো. খলিলুর রহমান বাবলু (এম কে রহমান) স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন। আর সম্পাদক পদে নাহিদ সুলতানা যুথী ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভুঁইয়া এবং কোষাধ্যক্ষ পদে মো. সাইফুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।