চট্টগ্রামের ব্যস্ততম বহদ্দারহাট মোড়ে নির্মিত হলো বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ স্মৃতি স্মারক। বৃহস্পতিবার সকালে নান্দনিক এই স্মৃতি স্মারক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ, কাউন্সিলর মো. এসরারুল হক, চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, স্থপতি আবদুলস্নাহ আল ওমর, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম, হেলাল আহমেদ, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন জয়, জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, নেছার আহমেদ, কাবেদুর রহমান কচি, আশরাফুল গনি, সাইফুল ইসলাম লিটন, পলাশ খাস্তগীর, শওকত হোসেন, ভাস্কর মান্না পাল, সুকান্ত প্রয়াস ও স্থপতি আজমুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনের সময় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করা হয়েছে, যা নতুন প্রজন্মের অনেকেই হয়তো জানেনা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই স্মৃতি ধরে রাখতে এই স্মৃতিফলক নির্মাণ করেছি। এই স্মৃতিফলক তরুণ প্রজন্মকে মনে করিয়ে দিবে স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামের ভূমিকার কথা।
কাঁচ দিয়ে নির্মাণ করা স্মৃতিস্মারকটি পিরামিড আকৃতির। কাঁচের ফ্রেমের ভেতর রয়েছে মাইক্রোফোন। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠের সময় যে মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছে এটি তার প্রতীক। পিরামিডটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সাত কোটি বাঙালির ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক।
চসিক সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান। স্বাধীনতার সঙ্গে বেতারের জড়িয়ে থাকা এ স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতি স্মারক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।
চট্টগ্রাম শহরের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করে ট্রেডম্যাক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই স্মৃতি স্মারকের উচ্চতা ১৮ ফুট এবং প্রস্থ ৩০ ফুট। স্মৃতিস্মারকটি নির্মাণে সময় লেগেছে চার মাস। পুরো স্মৃতিস্মারকটির চারপাশে রয়েছে ফোয়ারা। দুই পাশে আরও দুটি ফোয়ারা নির্মাণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাকি খালি জায়গায় করা হচ্ছে বাগান। কয়েক মাসের মধ্যে এ বাগান দৃশ্যমান হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া এখানে লাইটিং করা হবে। ঝর্ণা থাকবে। স্মৃতিস্মারকটিকে ঘিরে পুরো এলাকাকে মিনি পার্কের আদলে করা হবে। সবমিলিয়ে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠবে জায়গাটা। স্মৃতি স্মারকের আর্কিটেকচারের দায়িত্বে ছিলেন স্থপতি আজমুল হক। ভাস্কর সুকান্ত ভট্টাচার্য এবং মান্না ঘোষ এটি নির্মাণ করেন।
ট্রেডম্যাক্সের স্বত্বাধিকারী ফরিদ মাহমুদ বলেন, কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠকে নতুন প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে এটি নির্মাণ করা হয়। প্রথমে এখানে একটি কম বাজেটের ক্লক টাওয়ার করার পরিকল্পনা ছিল। পরে মেয়রের আগ্রহে প্রকল্প সংশোধন করে নতুন রূপ দেওয়া হয়। স্মৃতিস্মারক ভাস্কর্য এবং ফোয়ারাসহ মিলিয়ে এখানে মিনিপার্ক গড়ে উঠবে।