আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অবৈধ মজুতদার ও বাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আসন্ন রমজানে ঢাকা সিটিতে কেউ যাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ে কারসাজি করতে না পারে সে জন্য নজরদারি করা হচ্ছে উলেস্নখ করে সিআইডি প্রধান বলেন, 'আমরা ১২টি টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা মাঠে কাজ করছে, নজরদারি চালাচ্ছে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন তাদের ওপর বিশেষ নজরদারি থাকছে। কেউ যাতে দাম বাড়াতে না পারেন সেটিই এ ১২টিমের কাজ। যে ব্যবসায়ীরা মজুতদারি, কালোবাজারি করছেন নজরদারিতে ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে ৪৬ জনের মৃতু্য হয়েছে। ওই ঘটনার নেপথ্যের কারণ খুঁজছে ফায়ার সার্ভিস। ইলেকট্রিক কেতলি ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হলেও সঠিক তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। ঘটনাস্থল থেকে ১৫টির বেশি আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ফরেনসিক টিম। সেগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই স্পষ্ট হবে আগুনের নেপথ্যে কী ছিল কারণ।
সিআইডি প্রধান বলেন, রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকান্ডে ফায়ার সার্ভিস যখন সমস্ত কাজ শেষ করেছে, আগুন নিভিয়েছে তখন সিআইডির একাধিক টিম সেখানে কাজ করেছে। সেখানে সিআইডির ফরেনসিক টিম, ডিএনএ টিম ও কেমিক্যাল টিম কাজ করেছে। বেশ আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়া যাবে আগুনের কারণ কী।
তিনি বলেন, 'প্রাথমিকভাবে আমরা যেটা জানতে পেরেছি, গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাতের সম্ভাবনাই বেশি। কেমিক্যাল আলামতও টেস্ট করা হচ্ছে। এটার কারণ হচ্ছে সেখানে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল কি-না। আলামত পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। রিপোর্ট পেলেই নিশ্চিত হবে আগুনের কারণ।'
উলেস্নখ্য, গত ২৯ ফেব্রম্নয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগে। রাত ৭টা ৫০ মিনিটে খবর পেয়ে দুই ঘণ্টার মধ্যে ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। তবে এই ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃতু্য হয়।
এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র সুরক্ষা সচিবের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিতে পুলিশ, রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, বুয়েট ও ঢাকার ২ সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়েছে। এই কমিটি চার মাসের মধ্যে বেইলি রোডে আগুনের কারণ অনুসন্ধান করবে এবং কারা এর জন্য দায়ী তা খুঁজে বের করবে। এ ছাড়া রাজধানীর ভবনগুলোতে আগুনের ঘটনা প্রতিরোধে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কেমন হবে তার সুপারিশ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
পৃথক দুটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৪ মার্চ বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।