মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত সুবিধা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। আর উচ্চশিক্ষার কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০৩০ সালের মধ্যে মোট জাতীয় বাজেটের ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরামর্শ দিয়েছে তারা।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই পরামর্শ দেন ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, 'বর্তমানে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির ২ শতাংশের কম। শিক্ষা খাতে এত কম বরাদ্দ দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশে নেই। এই স্বল্প বাজেট দিয়ে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জিং। দেশে ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।' নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দ্রম্নততম সময়ে অ্যাকাডেমিক ও ভৌত অবকাঠামোর মাস্টার পস্ন্যান তৈরি এবং এ অনুসারে স্মার্ট ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক আলমগীর।
প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বর্তমান সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, 'দেশে মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ১০-১২ শতাংশ উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। মেধা ও জ্ঞানভিত্তিক প্রজন্ম তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত ও আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে রূপান্তর করতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৭০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। সেক্ষেত্রে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং সেখানে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করতে হবে।'
কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বিশ্ববিদ্যালয় দিবস' উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। গুরুদয়াল সরকারি কলেজে অবস্থিত অস্থায়ী ক্যাম্পাসে রোববার প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হক ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আ ন ম মুশতাকুর রহমান। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইমান আলী। বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক পারভেজ সাজ্জাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক মাস্টার পস্ন্যানের আওতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে ডিপিপি তৈরি করা হয়েছে।
গুরুদয়াল সরকারি কলেজে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রোববার সকালে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর ক্যাম্পাস থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দর্ যালি বের করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
উলেস্নখ্য, ২০২৩ সালের ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ১০ তলা ভবনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত, হিসাব বিজ্ঞান ও ইংরেজি বিভাগে ২৪০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।