মামলাজট কমাতে হলে বিচারক বাড়াতে হবে
প্রধান বিচারপতি
প্রকাশ | ০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, মামলাজট একটি পুরনো ব্যাধি। মামলাজট কমাতে গেলে বিচারকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করতে হবে।
শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত
প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের জন্য নবনির্মিত বিশ্রামাগার 'ন্যায়কুঞ্জ' উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, 'মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সেজন্য মামলা জট বাড়ছে। মানুষ লেখাপড়া যত শিখছে এতে মনে হয় মানুষ এক ধরনের অস্থিরপ্রবণ হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করে বোঝাতে হবে।'
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'শুধু মামলা-মোকদ্দমা করেই সমস্যা সমাধান হয় না। বিকল্প ব্যবস্থা আছে। আগে গ্রামের সালিশ ছিল। আইন করে 'বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি' পদ্ধতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেটাকে যদি জনপ্রিয় করা যায় তাহলে মামলা জট কিছুটা কমবে।'
তিনি বলেন, 'যে সংখ্যা বিচারক সারা বাংলাদেশে থাকা দরকার সেই সংখ্যা বিচারক নেই। আমাদের দেশে ৯০ থেকে ৯৫ হাজার মানুষের জন্য একজন বিচারক। তা আবার সহকারী জজ থেকে প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত। এত কম বিচারক দিয়ে মামলা জট কমানো সম্ভব নয়। সেজন্য আমরা প্রতিবছর জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে একশ' বিচারক নিয়োগ করতে পারি। এই সংখ্যাটা বাড়াতে হবে। লজিস্টিক সাপোর্টসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।'
'আমাদের বিচারকরা কোর্টে অলস সময় কাটান না। তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তারপরও মামলার শেষ হচ্ছে না। মামলা আরও বাড়ছে। এক বছর যদি থাকে মামলা ৫০০, পরের বছর দেখা যায় মামলা সংখ্যা ৫৫০ হয়ে যায়।' এ সময় উলেস্নখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'মানুষ বাড়ছে। জমিজমার দাম বাড়ছে। খামোখা মামলা হয়। অনেক মামলা এমনিতেই হয়। আমরা যে বিষয়টি পারিবারিকভাবে বা সামাজিকভাবে সমাধান করতে পারি সেটা না করে আমরা আদালতে চলে যাই। সেজন্য মামলা বাড়ছে। বিচার প্রার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। আশা করি এর একটা সমাধান হবে।'
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবু্যনাল-১ এর বিচারক মো. ফারুক, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, গণপূর্ত বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, জেলা জজকোর্র্টের জিপি অ্যাডভোকেট ওয়াছেক আলী, পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারকসহ আইনজীবী ছিলেন।
ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধনের পর প্রধান বিচারপতি সিজিএম কনফারেন্স রুমে বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিকালে তিনি আখাউড়া উপজেলার ধলেশ্বর গ্রামে রাবেয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।