২৪টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক নিয়ে ট্রেনে চড়ে কক্সবাজারে সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। বিদেশি কূটনীতিকরা যাতে দেশের অগ্রগতি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারেন সে জন্যই আউটরিচ এই প্রোগ্রাম। মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম থেকে বিশেষ ট্রেনে কক্সবাজারে এসে পৌঁছান তারা।
এ সময় পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাম্বেসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রামের আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ফ্রান্স এবং এফএও, আইইউটি, একেডিএন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ২৪ জন মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনৈতিক সদস্য ছিলেন।
৩৪ কূটনীতিক বহর নিয়ে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার পৌঁছানোর পর তাদের সম্মানে রাখাইন নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এ সময় তারা উপভোগ
শেষে আইকনিক স্টেশনের ভেতরে ঘুরে দেখেন। এরপর পরই প্রতিনিধি দলকে নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইনানীতে রয়েল টিউলিপ হোটেলের উদ্দেশে রওনা হন।
এ সময় জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, চট্টগ্রাম থেকে টানেলসহ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দেখে ট্রেনে করে কক্সবাজারে এসেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩৪ জন কূটনীতিক।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে আসা বিদেশি কূটনীতিকরা যাতে আমাদের দেশের অগ্রগতি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারেন সেজন্যই কক্সবাজারের উন্নয়ন প্রকল্প, রামু বৌদ্ধ মন্দির পরিদর্শন করবেন। কূটনীতিকদের এই পরিদর্শনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির সামর্থ্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে তাতে আমাদের দেশকে তারা ভালোভাবে জানতে পারছেন। আর এ জানার মাধ্যমে তারা তাদের নিজেদের দেশে বাংলাদেশের উন্নয়ন এই বার্তা পৌঁছে দেবে বলে জানান তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ৩৪ জন কূটনৈতিক সদস্যকে নিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, 'বিদেশি রাষ্ট্র্রদূতরা যেন আমাদের দেশকে জানেন, দেশে যে বিরাট উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ হচ্ছে সেগুলো যেন স্বচক্ষে দেখেন, সেই কারণেই তাদের চট্টগ্রামে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এই সফরের আয়োজন এবং এটি পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয়ের একটি উদ্যোগ।'
তিনি বলেন, 'কূটনীতিকরা এই পরিদর্শনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির সামর্থ্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে তা ভালোভাবে জানতে পারছেন। বাংলাদেশকে জানার মাধ্যমে তারা তাদের দেশকে এই বার্তা পৌঁছে দেবে এবং বাংলাদেশের এই খবরগুলো তারা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেবেন।'
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, 'আপনারা জানেন যে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ট্রেন লাইন হয়েছিল ১৯৩০ সালে। কিন্তু তার অনেক আগেই চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ট্রেন লাইনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। অর্থাৎ ১৯০০ সালের পরপরই সেটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু দেশ বিভাগ হলো, দেশ বিভাগের পর বাংলাদেশ হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু তিনিও বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। কারণ তাকে সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করা হয়েছিল। বিধ্বস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি পুনর্গঠিত করার আগেই তাকে হত্যা করা হয়।
'এই জনপদের মানুষ যে স্বপ্ন ১২৫ বছর আগে দেখেছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে। এটি একটি অসাধারণ কাজ। তাই আমরা কূটনীতিকদের চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে করে কক্সবাজার নিয়ে যাচ্ছি।'
পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী নিজেও চট্টগ্রাম থেকে প্রথম ট্রেনে করে কক্সবাজার যাচ্ছেন উলেস্নখ করে বলেন, 'তাদের আনার মূল উদ্দেশ্য, তারা যেন বাংলাদেশকে জানেন এবং চেনেন। আমাদের দেশে যে দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। এই সমুদ্রসৈকতের খবরটা যেন তাদের মাধ্যমে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের সৌন্দর্য ও উন্নয়ন সম্পর্কে তারা যেন ভালো করে জানতে পারেন, সেজন্যই তাদের আমরা নিয়ে এসেছি।'