অমর একুশে বইমেলায় ২৮তম দিন আজ বুধবার প্রকাশিত হবে মো. সাইদুর রহমানের 'স্রষ্টা, সৃষ্টি ও মুক্তি' বইটি। এটি লেখকের প্রথম কবিতার বই। লেখকের ইচ্ছা বই ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই আজীবন মানবকল্যাণে নিয়োজিত থাকা। সেই প্রচেষ্টার প্রথম নিবেদন এই কবিতার বই বলে জানালেন তিনি।
লেখকের দৃঢ় বিশ্বাস- বইটি একজন সৃজনশীল মানুষের ইসলামী শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরিতে, নৈতিক শিক্ষার মান উন্নয়নে এবং সামাজিক হ
সংগঠন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
মো. সাইদুর রহমান বিএডিসির অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। তিনি ১৯৬৬ সালে এসএসসি, ১৯৬৯ সালে এইচএসসি, ১৯৭৪ সালে প্রকৌশলী ডিপেস্নামা, ১৯৭৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং ১৯৮৫ সালে এমআইই উত্তীর্ণ হন। শৈশবে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার গোসাইডাঙ্গী, বর্তমান রসুলপুর গ্রাম থেকে লেখকের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। বাবা মরহুম কফিল উদ্দিন শেখ, মাতা মরহুমা কমলা সুলতানা। বাবার আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অল্প বয়সেই চাকরিতে যোগ দেন তিনি। প্রথম নিযুক্তি পাকিস্তানি টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন সংস্থায় ১৯৬৭ সালে। চাকরিরত অবস্থায় বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেই তার শিক্ষা লাভ। ১৯৭৪ সালে বাবার অকাল মৃতু্যতে ভাই-বোনদের প্রতি দায়িত্ব পালনে তৎপর ছিলেন। মেঝ ভাই নাজমুল ছালেহীন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রধান নির্বাহী ছিলেন। তৃতীয় ভাই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রকৌশলী। ছোটভাই গ্রামের স্কুলের শিক্ষক।
লেখক, ছাত্রজীবনের শুরুতেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে যশোর পলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়ায় স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। তিনি দীর্ঘ আট বছর আদর্শ পাড়ার জামে মসজিদে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে আদর্শ জামে মসজিদে লাইব্রেরি ও ইসলামিক গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তার গঠিত মসজিদ কমিটির গঠনতন্ত্র আংশিক রদবদল করে ধর্ম মন্ত্রণালয় বর্তমান কমিটির গঠনতন্ত্র অনুমোদন করে। তিনি ১৯৭৯ সালে বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান। পরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে যোগ দেন। ২০০৭ সালে সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। সংসার জীবনে তিনি একজন সৌভাগ্যবান বাবা। বড় মেয়ে ফেরদৌস আরা অতিরিক্ত জেলা জজ। ছোট মেয়ে জান্নাত আরা সপরিবারে কানাডা প্রবাসী হওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে দেশের বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বড় ছেলে যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের এসএভিপি ও শাখা ব্যবস্থাপক। ছোট ছেলে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। অবসর গ্রহণের পর সুপিরিয়র বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার লি. নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে তিনি সহধর্মিণীকে সঙ্গে নিয়ে হজব্রত পালন করেন।
লেখকের সহধর্মিণী শাহানারা রহমান সংসার জীবনে আত্মত্যাগ এবং সন্তানদের সফলতার পেছনে আত্মনিয়োগ ও পরিশ্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে 'আজাদ প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে 'রত্নগর্ভা মা' পুরস্কারে ভূষিত হন।
১৯৯৭ সালে লেখক তার প্রয়াত পিতার নামে ঝিনাইদহ শহরে প্রতিষ্ঠা করেন স্বেচ্ছাসেবী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কফিল উদ্দিন ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচি মূলত ইসলামী কালচার প্রধান। প্রতিষ্ঠানটি স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত। ২০১৪ সালে লেখক গঠন করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামী রিসার্চ বাংলাদেশ।
মো. সাইদুর রহমান জানান, বইটি প্রকাশ করেছে কণ্ঠস্বর। এটি পাওয়া যাবে বইমেলার ৫৫৪ নম্বর স্টলে।