ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জমজমাট প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের এই প্রচারাভিযানে সরগরম শহরের অলিগলি। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট প্রার্থনা নজরে পড়ার মতো। নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন। চষে বেড়াচ্ছেন বাসাবাড়ি, দোকানপাট, মার্কেট, কাঁচাবাজার। এলাকার উন্নয়নে ভোটারদের কাছে করছেন নানা অঙ্গীকার।
গণসংযোগ, উঠান বৈঠকসহ নানাভাবে ভোটারদের কাছে টানতে কাজ করছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। নির্বাচনী এলাকায় শোডাউন, লিফলেট বিতরণ চলছে। পাট বা পস্নাস্টিকের রশিতে পোস্টার ঝুলিয়ে দিয়েছেন শহরের সর্বত্র। পাড়া-মহলস্নায় স্থাপন করা হয়েছে নির্বাচনী প্রচার ক্যাম্প। সেখানে সারাক্ষণ ভিড় দেখা গেছে প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের।
ময়মনসিংহ সিটির মেয়র পদে সদ্য পদত্যাগকারী মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু (দেয়াল ঘড়ি), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম (ঘোড়া), শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু (হাতি), কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক (হরিণ) এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করছেন।
ইকরামুল হক টিটু শনিবার নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকার অনুভব কমিউনিটি সেন্টারে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সমাবেশ ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালান। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সবার দোয়া ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। ঘড়িকে উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে উলেস্নখ
করে টিটু বলেন, 'উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ করতে নগরবাসী আবারও এ প্রতীকে আস্থা রাখবে। বিগত পাঁচ বছরে শতভাগ উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। সাধারণ মানুষ আমার প্রতি তাদের সমর্থন দিলে চলমান উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করতে পারব। সাধারণ জনতার পাশাপাশি নেতাকর্মীরাও আমার সঙ্গে রয়েছে। আশা রাখছি, জয় সহজেই আসবে।'
এহতেশামুল আলম নগরীর কাঁচিঝুলিসহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বলেন, 'মানুষকে "সুন্দর" ও "স্মার্ট" শহর উপহার দিতেই প্রার্থী হয়েছি। প্রতীক হাতে পেয়েই মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছি। আমার পক্ষে সাধারণ মানুষের বেশ সাড়া রয়েছে। কারণ বিগত সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি।'
অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু নগরীর ৩৩নং ওয়ার্ডে শনিবার দুপুরে প্রচারণা চালান। তিনি বলেন, 'নগরের মানুষ আকাশ দেখতে চায়, পরিচ্ছন্ন জায়গায় বসবাস করতে চায়, যানজট সমস্যার নিরসন চায়। তাই তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি প্রার্থী হয়েছি। পছন্দের প্রতীক হাতি পেয়েছি মানুষ পরিবর্তনের লক্ষ্যে হাতি প্রতীকেই আস্থা রাখবে।'
মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন।
এ সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭১ জন পুরুষ, ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১০ জন নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৯ জন। আগামী ৯ মার্চ ইভিএমে ১২৮ কেন্দ্রে ভোট দেবেন এসব ভোটার।
মসিক নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী ছাড়াও নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে যাচাই ও আপিলে ১৫৮ জনের প্রার্থিতা টেকে। ৯ জন সরে যাওয়ায় বর্তমানে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী রয়েছেন ১৪৯ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী আছেন ৬৯ জন। নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিল নির্বাচিত হওয়ায় কাউন্সিলর পদে ৩২ ওয়ার্ডে শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।