রোজার আগে তেলের বোতলে নতুন মূল্য লেখা থাকবে
-বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
রোজার আগে যে তারিখে কারখানা থেকে তেল বের হবে সেই তেলের বোতলে নতুন মূল্য মার্ক করা থাকবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেন, 'মঙ্গলবার জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে তেলের দাম পুনর্র্নির্ধারণ করতে পারব বলে আমরা আশা করছি। এছাড়া গত মাসখানেক ধরে আমরা যে চেষ্টা করছি, রমজান শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই সেটার বাস্তবায়ন হবে।'
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন দাবি করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'রোজায় ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য সরবরাহ ও দাম নিয়ে যাতে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে সেটা দূর করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আমাদের জাতীয় যে কমিটি আছে, জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠক মঙ্গলবার (২০ ফেব্রম্নয়ারি) হবে। সেখানে তেলের দাম পুনর্র্নির্ধারণ করতে পারব বলে আমরা আশা করছি। বাকি পণ্যগুলোর ইন্ডিকেটিভ (নির্দেশক) মূল্য, সেটা ২০ ফেব্রম্নয়ারি আমাদের জাতীয় টাস্কফোর্সের যে বৈঠক আছে, সেই কমিটিতে বসে করা হবে।'
তিনি বলেন, 'আমি আগেও বলেছি, আমাদের সবকিছু রমজানকে কেন্দ্র করে। রমজান শুরু হবে ১১ মার্চ। বাকি সময়টা আমাদের প্রস্তুতির জন্য। আমরা চেষ্টা করব, বৈঠকে একটা দামও নির্ধারণ করতে। যে তারিখে কারখানা থেকে তেল বের হবে, সেই তেলের বোতলে নতুন মূল্য মার্ক করা থাকবে।'
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, 'আপনারা জানেন, প্রথমে অপরিশোধিত তেল আমদানি হয়, পরে সেটা পুনর্র্নির্ধারিত ট্যারিফ অনুসারে খালাস হওয়ার পর কারখানায় গেলে সেই উৎপাদিত তেলেরই দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এটার জন্য একটা সময় লাগে, একটা যৌক্তিক সময় তাদের দিতে হয়। আমরা মঙ্গলবার আপনাদের পুনর্র্নির্ধারিত মূল্য ও কবে থেকে ভোক্তারা সেই সুবিধাটা পাবেন, সেটা নির্ধারণ করে জানাব।'
এ ক্ষেত্রে আপনাদের মনিটরিং থাকবে কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'মাঠপর্যায়ের মনিটরিং থাকবে। যেদিন থেকে ঘোষণা করা হবে, সেদিন থেকে আমাদের কারখানা মূল্য, টিপি ও ভোক্তা পর্যায়ের মূল্য একদিনে পরিবর্তন হবে। আমরা যেদিন নির্ধারণ করব, সেদিন এমআরপি নির্ধারণ করে দেব। সেটা হচ্ছে, এমআরপি সর্বোচ্চ এত টাকায় বিক্রি হবে, এর বেশিতে কেউ বাজারে বিক্রি করতে পারবে না।'
রমজানের আগেই চিনি-পেঁয়াজ আমদানি
রমজানের আগেই সরকার ভারত থেকে চিনি-পেঁয়াজ আমদানি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
তিনি বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও এক লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদা দিয়েছি। এর মধ্যে ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও ৫০ হাজার মেট্রিক টন চিনির প্রতিশ্রম্নতি পেয়েছি। প্রত্যাশা করছি, চাহিদার পুরোটাই আমরা নিয়ে আসতে পারব।'
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'রোজার আগেই ভারত থেকে পেঁয়াজ ও চিনি আসবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। ভারত সফরে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে আশ্বস্ত হয়েছেন। আশা করি, সোম থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে আমরা একটি ভালো খবর পাব। কীভাবে, কত তারিখ থেকে আমদানি করব, সেটা অনুমোদন পেলেই আমরা বাকি পণ্যগুলোর কথা জানাতে পারব।'
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, 'এ ক্ষেত্রে তাদের (ভারত) মিনিস্টিরিয়াল বৈঠক ১৪ ফেব্রম্নয়ারি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মানিতে আছেন। তিনি বিদেশ থাকায় বৈঠকটি হতে একটু দেরি হচ্ছে। আশা করছি, সোম থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে কোনো এক সময় এই বৈঠক হবে। এখনো বিশ্বাস করি, ভালো ফল হবে। আমরা প্রত্যাশা করছি, আমাদের চাহিদার পুরোটাই আমরা রোজার আগে নিয়ে আসতে পারব।'
তিনি বলেন, 'আর একই উৎস না, বিকল্প উৎস থেকেও আমরা চেষ্টা করছি। ভারতের আশপাশের দেশগুলো থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। নেপাল থেকে ডাল আসে, মিয়ানমারে সীমান্ত পরিস্থিতি ভালো না হলেও সেখান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনার প্রক্রিয়া চলছে। সেটা দ্রম্নত আপনাদের জানাতে পারব।'
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'এছাড়া গত বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। তারা জানিয়েছেন পণ্য সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। আমদানিকারক ও মিলমালিকরা ঠিকমতো সরবরাহ করলে খাতুনগঞ্জ থেকে সম্পূর্ণ সহায়তা পাওয়া যাবে। রমজান উপলক্ষে তারা এই পণ্য সারাদেশে সরবরাহ করবে।'