বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে মতপ্রকাশ, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নেই। জেনেটিক্যালি ফ্যাসিস্ট বাকশালী দল- আওয়ামী লীগের রক্তের মধ্যেই রয়েছে বাকশালী কর্তৃত্ববাদীর বীজ। যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটিকে মুছে দেয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার জনগণ মানে তার লুটেরা আওয়ামী লীগার। আওয়ামী নেতাকর্মী, উচ্ছিষ্টভোগী, ভোট ডাকাত, দালাল লীগের কর্মচারী-কর্মকর্তারা গণতন্ত্রের লেবাস গায়ে জড়িয়ে সুবিধা ভোগ-উপভোগ সবকিছু করছে। শেখ হাসিনা তাদের কথাই বলছেন।
রিজভী বলেন, বিরোধীদের ওপর বুলডোজার চালানোর পর নজিরবিহীন উদ্ভট ডামি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে চালু হয়েছে এক ব্যক্তির নিরঙ্কুশ শাসনব্যবস্থা। গোটা বাংলাদেশ এখন তার হাতে জিম্মি হয়ে
গেছে। সর্বত্রই বিরাজ করছে এক ভয়াবহ বিভীষিকা। আওয়ামী লুটেরা, হন্তারক, সন্ত্রাসী, নারী নির্যাতনকারী, খুনি, দখলবাজ-টেন্ডারবাজদের এক উচ্ছৃঙ্খল উলস্নাসের দৃশ্যপট দেশজুড়েই।
তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ গণতন্ত্র নয়, স্বৈরাচারের নিষ্ঠুর সাজা ভোগ করছেন। ভোটাধিকার বঞ্চিত হওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করছেন। ক্ষুধার জ্বালায় চোখের পানিতে ভাসছে। নিপীড়ন উপভোগ করতে করতে মানুষের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। মানুষের ভাষাও হারিয়ে গেছে। অসহিষ্ণুতা, সীমাহীন লোভ আর উদ্ধত রাষ্ট্রশক্তিকে আশ্রয় করে সর্বত্রই ফ্যাসিবাদের বিকৃত হিংস্র রূপ প্রকট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে সীমানায় শুধুই অশান্তির আগুন।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে যে, নির্বাচন হয়েছে ঠিকই কিন্তু অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। তাদের দেখাতে হবে কোথায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। ভোটের নামে জাল ভোটের প্রতিযোগিতা, শিশু-কিশোর ভোট, রাস্তা থেকে পথিক ধরে নিয়ে ভোট, একই ব্যক্তির ৫০ ভোট, মিনিটে ৫০ ভোট, একই লাইন থেকে ঘুরেফিরে বারবার জাল ভোট দিয়েও ভোটের দিন বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোটের ঘোষণা দিয়ে গণভবনের চাপে আবার এক ঘণ্টা পরেই ৪০ শতাংশ এবং তার পরের দিন অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি দুপুরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোটের গোজামিলের ভৌতিক হিসাব বানানোর ভুয়া হাস্যকর নির্বাচন ভোটের ইতিহাসে কলঙ্ক তিলক উৎকীর্ণ করেছে ডামি সরকার।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার আবারও ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। তোড়জোড় শুরু হয়েছে দ্রম্নত পানির দাম বাড়ানোর জন্য। জনগণের পকেট কাটার আরেকটি কৌশল নিয়েছে দখলদার সরকার। ঢাকা ওয়াসা লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ার পরেও অন্যায়ভাবে পানির দাম বাড়ানোর আয়োজন চলছে। দেশের শহরগুলোতে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বড় শহরগুলোতে সুপেয় পানির বড়ই সংকট। সেক্ষেত্রে অযৌক্তিকভাবে ওয়াসার পানির মূল্য বাড়লে নাগরিক জীবনে আরেকটি নতুন সংকট তৈরি হবে। ডামি সরকার জনগণের বাঁচা-মরাকে পাত্তা দেয় না। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের রক্ত চুষে নিতেই এরা তৎপর। সারাদেশের তীব্র গ্যাসের সংকট থাকলেও এরই মধ্যে গ্যাস ও বিদু্যতের দাম বাড়ানোরও তৎপরতা শুরু হয়েছে। দখলদার সরকারের নীতিই হচ্ছে গরিব মানুষের পকেট কাটা।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং গ্রেপ্তারের বর্ণনা তুলে ধরেন।