অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রি চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রি চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সদস্যর্ যাবের হাতে গ্রেপ্তার -সংগৃহীত
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে অবৈধ নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রি চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে রাজধানীর নিউ মার্কেটে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)। গ্রেপ্তাররা হলেন- মূলহোতা মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩০), মো. ফয়সাল হোসেন (২৭), মো. আশিক শেখ (২০), মো. শরিফুল (২৪) ও মো. রাসেল (২৬)। বুধবার রাজধানীর টিকাটুলীতের্ যাব-৩ প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানর্ যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নিউমার্কেটের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ১২টি নেটওয়ার্ক বুস্টার, ১৬টি বুস্টার আউটডোর এন্টিনা, তিনটি রেডিও ট্রান্সমিটার, ১২টি বুস্টার ইনডোর এন্টিনা, তিনটি বুস্টার ক্যাবল, ১৮টি কনভার্টার, ১৫টি চার্জার, ১০টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিমকার্ড, তিনটি হাতঘড়ি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, দুটি এনআইডি কার্ড, ৩৪টি এটিএম কার্ড ও নগদ ৯ হাজার ৫৩০ টাকা উদ্ধার করা হয়। অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, চক্রটি ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে বিজ্ঞাপন দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রি করে আসছে। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বিক্রি করত। তিনি বলেন, রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার টুজি, থ্রিজি এবং ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এ কারণে বিভিন্ন অপরাধীরা অপরাধ করতে উচ্চমূল্যে এসব অবৈধ যন্ত্রপাতি কিনে দুর্গম এলাকায় বসে অপরাধ করে আসছে। এসব যন্ত্র ব্যবহার করে অপরাধীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়ানোর চেষ্টা করে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ বলেন, ফোর-জি রাউটার আমদানির নামে এসব যন্ত্রাংশগুলো বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসে। এ ছাড়া বিভিন্ন চোরাই পথের মাধ্যমেও তারা এসব যন্ত্রাংশ আমদানি করে থাকে। পরে তারা হোয়াটসঅ্যাপে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে এসব যন্ত্রাংশগুলো উচ্চমূল্যে বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে বিক্রি করত। এ চক্রটি বিগত পাঁচ বছরে অজস্র রেডিও ট্রান্সমিটার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রয় করেছে। চক্রটি প্রতি সেট এন্টেনা ২০ হাজার টাকা এবং প্রতি সেট রেডিও ট্রান্সমিটার ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছে বিক্রয় করে আসছে। র?্যাব-৩ অধিনায়ক আরও বলেন, বিটিআরসির অনুমোদন ব্যতীত এসব যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ কেনাবেচা দন্ডনীয় অপরাধ। চক্রটি পাঁচ বছর ধরে অবৈধভাবে নেটওয়ার্ক বুস্টার ও রেডিও ট্রান্সমিটার বিক্রি করছে। চক্রের মূলহোতা জাহাঙ্গীর দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এরপর সে কিছুদিন একটি মোবাইল কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করে। ২০১৪ সালে সে ঢাকায় এসে সিসি ক্যামেরা মেরামত ও ইনস্টল করার কাজ শুরু করে। পরে নিজেই নিউমার্কেট এলাকায় ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের ব্যবসা শুরু করে। আমদানি নিষিদ্ধ এসব অবৈধ বুস্টার, ট্রান্সমিটার ব্যবসা শুরু করে। তার সহযোগী আশিক, শরিফুল ও রাসেল সবাই ইলেক্ট্র্রনিকস ডিভাইসের অভিজ্ঞ হওয়ায় জাহাঙ্গীর তার ব্যবসাকে প্রসারিত করার জন্য তাদের দলে ভেড়ায়। তারা টেকশপ বিডি নামে ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশ বিক্রি করে আসছে। এসব অবৈধ ডিভাইস বিক্রয়কারী চক্রের বিরুদ্ধে র?্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।