মসিক নির্বাচন
মনোনয়ন জমা দিলেন সাত মেয়র প্রার্থী
প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ময়মনসিংহ বু্যরো
উৎসবমুখর পরিবেশে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। সিটির দ্বিতীয় ভোটে মেয়র হতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের ছয়জন এবং জাতীয় পার্টির একজন মনোনয়ন জমা দেন। এ ছাড়াও ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন মনোনয়ন জমা দেন। আগামী ২২ ফেব্রম্নয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ ২৩ ফেব্রম্নয়ারি। ৯ মার্চ ইভিএম এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শেখ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, সকাল থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মেয়র পদে সাতজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সদ্য সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এহতেশামূল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিলু, নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. মো. রেজাউল হক এবং জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল।
দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একাংশ নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সদ্য সাবেক মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, বিগত পাঁচটি বছর জনগণের পাশে থেকে কাজ করেছি। চেষ্টা করেছি নগরীকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য। কিন্তু কোভিড ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে প্রত্যাশিত উন্নয়ন করতে পারিনি। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমাদের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। গত নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম। এবার অনেকেই প্রার্থী হয়েছেন। যার কারণে ভোট উৎসবমুখর হবে। আশা করি, জনগণ আগামী ৯ মার্চ আমার কাজের মূল্যায়ন ভোটের মাধ্যমে করবেন।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে মেয়র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এহতেশামূল আলম বলেন, বিগত পাঁচ বছরে নগরীতে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। যার কারণে মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে আমি মেয়র প্রার্থী হয়েছি। মেয়র নির্বাচিত হলে নগরীতে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ যানজট, জলাবদ্ধতা এবং ধুলাবালিমুক্ত নগরী গড়ে তুলবো।
শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু বলেন, নির্দিষ্ট প্রতীক না থাকলেও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী আমার সঙ্গে রয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আমার বড় শক্তি ইমেজ। শহরে আমার ভালো একটি ইমেজ রয়েছে। এবার পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। আশা করি, সাধারণ ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করবে।
জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল বলেন, ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টির একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। যেহেতু এখানে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছে, সেহেতু মানুষ জাতীয় পার্টিকেই বেঁচে নেবে। তবে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। জয়ী হলে অবহেলিত ময়মনসিংহ নগরীকে ঢেলে সাজাব সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে।
১৫৭ বছরের পুরনো ময়মনসিংহ পৌরসভা ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর সিটি করপোরেশনে উন্নীত হলে ২০১৯ সালের ৫ মে প্রথম সিটির ভোটগ্রহণ হয়। তখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইকরামুল হক টিটু মেয়র নির্বাচিত হলে সাধারণ কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ভোট হয়েছিল।
৯১ দশমিক ৩১৫ বর্গকিলোমিটারের আয়তনের এই নগরীতে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৭২ জন, নারী ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫ জন এবং হিজড়া ৯ জন।