রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীতে বাড়ছে ইলিশের উৎপাদন

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

আবেদুল হাফিজ, রংপুর
রংপুর অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা উলেস্নখযোগ্য হারে বেড়েছে। এসব নদ-নদীতে আগে বিক্ষিপ্তভাবে ইলিশ মাছ ধরা পড়ত। ছিল না ইলিশের বাজার ব্যবস্থা। তবে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে এ চিত্র পাল্টে গেছে। এখন চলছে জেলেদের মাধ্যমে ইলিশ মাছ আহরণ ও বাজারজাতকরণ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ হাজার জেলের হাতে এ অঞ্চল থেকে ৩১৪ টন ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে বলে মৎস্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে। রংপুর বিভাগীয় মৎস্য দপ্তর থেকে জানা গেছে, একযুগ আগেও রংপুর অঞ্চলে ইলিশ মাছ আহরণ ছিল না। এ অঞ্চলের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীতে অনেকেই ইলিশ মাছ ধরেছে। এ অবস্থাকে মাথায় রেখে ইলিশ মাছ গবেষকরা এসব নদী থেকে ইলিশ মাছ আহরণের সিদ্ধান্ত নেন। দশ বছর আগে এই আহরণ শুরু হয়। এজন্য মৎস্য অধিদপ্তর স্থানীয় জেলেদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, সচেনতামূলক সভা-সেমিনার করেছে। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের আমলে জেলেদের পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে রংপুর অঞ্চলের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা বেড়েছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে গাইবান্ধা জেলা সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম জেলা সদর, রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী, নাগেশ্বরী ও উলিপুর উপজেলার নদ-নদীগুলো থেকে ৩১৪ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করে তা বাজারজাত করা হয়। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে আহরণ করা হয় ৩০৫ টন ইলিশ। তবে মাছ আহরণের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেলেও সরকারিভাবে তা এখনো প্রকাশিত হয়নি। সূত্রমতে মা ইলিশ সংরক্ষণে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়ে আসছে। এর অংশ হিসেবে গত বছর ৩২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। অভিযানের সংখ্যা ছিল ১০৩টি। এসময় ১৮০ কেজি মা ইলিশ আটক করা হয়। জব্দ করা হয় ২ হাজার ৪৫২ মিটার কারেন্ট জাল, যার মূল্য প্রায় সাড়ে সাঁইত্রিশ লাখ টাকা। মামলা হয় ২১টি, জরিমানা করা হয় ১১ হাজার ৪শ' টাকা। কারাদন্ড দেওয়া হয় নয়জনকে। এদিকে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনে ইলিশ মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হয়। কারণ হিসেবে জানা যায়, এ সময় মা ইলিশ মিঠাপনিতে এসে ডিম ছাড়ে। মাছ না ধরায় এ সময় জেলেদের কাজ থাকে না। তাই আপৎকালীন সময়ে ১৩ হাজার জেলের প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে ভিজিএফ'র চাল দেওয়া হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় মৎস্য দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম জানান, দশ বছর আগে এই অঞ্চলে ইলিশের প্রাপ্যতা ছিল শূন্যের কোটায়। বর্তমান সরকারের নানাবিধ উন্নয়নমূলক কর্মসূচির কারণে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবিষ্যতেও ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।