ভাড়ার ট্রাকে আনা পণ্য পৌঁছে না দিয়ে নিজেরাই বিক্রি করতেন

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাসা পরিবর্তন কিংবা পণ্য পরিবহণের নামে মালামাল আত্মসাৎ করে আসছিল একটি চক্র। এমনই একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ। গ্রেপ্তাররা হলেন মো. রাজিব হোসেন (২৪), মো. রাকিব হোসেন (৩০), চয়ন কুমার ঘোষ (৩২) ও মো. রেজাউল করিম (৪৫)। শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর পলস্নবী, কেরানীগঞ্জ ও লক্ষ্ণীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পণ্য পরিবহণে ব্যবহৃত ট্রাক ও হাতিয়ে নেওয়া ৬৫টি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখতে পাই, একটি চক্র রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মাধ্যমে ট্রাকে খাদ্যশস্য, ব্যাটারি বা বাসা পরিবর্তনের মালামাল পরিবহণের জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরবর্তী সময়ে তারা মালিকের কাছ থেকে মাল বুঝে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে না দিয়ে বিক্রি করে দিত। চক্রের সদস্যরা নিজেদের আড়াল করতে মালামাল পরিবহণের সময় গাড়ির ভুয়া কাগজপত্র ও ভুয়া নম্বর পেস্নট ব্যবহার করত। কাজ শেষ হলে গাড়ির রঙ ও নম্বর পেস্নট পরিবর্তন করে আরেকটি টার্গেট নির্ধারণ করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ১ ফেব্রম্নয়ারি খুলনার সোনাডাঙ্গার এক ব্যবসায়ী মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সুমন ইন্টারপ্রাইজে একটি ভাড়া করা ট্রাকে নতুন-পুরাতন মিলিয়ে ৩৫৫টি ব্যাটারি পাঠান। সঙ্গে যান তার কর্মচারী বিঞ্চু বিশ্বাস। সাড়ে ১৫ হাজার টাকায় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার চুক্তিতে খুলনা থেকে ঢাকায় আসে ট্রাকটি। এরপরই বদলে যায় তাদের গন্তব্য। মুন্সীগঞ্জের বদলে তারা কৌশলে কর্মচারী বিঞ্চুকে নামিয়ে দিয়ে নিজেদের গন্তব্যে চলে যায়। এরপর ৩৫৫টি ব্যাটারির মধ্যে ২৯০টি রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করে দেয়। এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান বলেন, চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন মার্কেটে চোরাই পণ্য বিক্রি করতেন। আমরা বেশকিছু নাম ও নম্বর পেয়েছি। যারা চোরাই পণ্য কেনেন তারাও চুরির মামলার আসামি হবেন। আমি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলতে চাই, পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। এই চক্রের কৌশলের বিষয় গোয়েন্দা পুলিশের পলস্নবী জোনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদ হাসান বলেন, চক্রটি কাজ শেষ করে পণ্য পরিবহণে ব্যবহৃত ট্রাকটির নম্বর ও রঙ পরিবর্তন করে ফেলত। যার প্রমাণ, খুলনা থেকে আনা পণ্য বিক্রির পর রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বাঁশপট্টি এলাকায় রঙ পরিবর্তন করার সময়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে। এ সময় ট্রাকটিতে লাগানো আগের নম্বর পেস্নট ছিল না।