আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের 'ট্রু ফর্ম' অনুসরণ করে বলে মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'আমরা গণতন্ত্রের ট্রু ফর্ম অনুসরণ করি। নির্বাচনে বিরোধী দল আসেনি, কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আমরা বলছি না আমাদের গণতন্ত্র শতভাগ পারফেক্ট। গণতন্ত্রের সবক দেয় যে পশ্চিমাবিশ্ব, তারাও পারফেক্ট নয়।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দিনক্ষণ দিয়ে দুনিয়ার কোনো দেশে আন্দোলন হয়েছে এমন কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। আন্দোলন হয় আন্দোলন হওয়ার মতো যখন বস্তুগত অবস্থান থাকে। যারা আন্দোলন করবে তাদের সাবজেক্টিভ প্রিপারেশন লাগবে। তাদের সাংগঠনিক প্রস্তুতি লাগবে। সে প্রস্তুতি আমাদের বিরোধী দল অর্জন করতে পারেনি। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে যে ভুল বিএনপি করেছে সে ভুলের খেসারত আরও অনেক দিন দিতে হবে।
বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে মাতামাতি করে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসে, সেভাবে পাকিস্তান নিয়ে করে না বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র আর
বাংলাদেশের গণতন্ত্র যোজন যোজন দূরের ব্যাপার। দুনিয়ার কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। পাকিস্তান ধরে রেখেছে। আমাদের দেশে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে মাতামাতি করে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসে, সেভাবে কিন্তু পাকিস্তান নিয়ে মাতামাতি নেই।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে, ভোট কারচুপির খবর মিডিয়ায়ও চলে এসেছে। সহিংসতায় মারা গেছে ৯ জন। কাজেই আমরা গণতন্ত্রের যে ট্রু ফর্ম সেটা অনুসরণ করি। আমাদের দেশে ইলেকশন হয়েছে, বিরোধী দল আসেনি। কিন্তু আমাদের নির্বাচনটা ফেয়ার হয়েছে।
আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার এজেন্ডার বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইলেকশন ম্যানিফেস্টো বাস্তবায়নে আমাদের দলের সুদৃঢ় ঐক্য দরকার। গত নির্বাচনে নির্বাচনটা সুষ্ঠু হয়েছে। কৌশলগত কারণে স্বতন্ত্ররা নির্বাচন করেছে। ৬২ জন নির্বাচিত হয়েছে। এরা কিন্তু আওয়ামী লীগেরই লোক, অনেকে পদধারীও রয়েছে। এখানে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দলের অভ্যন্তরে যে অন্তর্কলহ, দ্বন্দ্ব এসব মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের উপজেলা নির্বাচন, মেয়র নির্বাচনে যেতে হবে। এসব নির্বাচনে যেন কোনো প্রকার সংঘাত সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ দেবেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন প্রসঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, একজন বিনা বিচারে আটকে থাকবে এটা সরকার চায় না। জামিন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না এটা ঠিক নয়।
রাজনীতির মাঠে বিএনপি মহাসচিবের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, যতটুকু জানি অনেকগুলো মামলায় তার জামিন হয়েছে। একটি মামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় তার ক্ষেত্রে একটু অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয়তো একটা সময় জামিন হয়ে যাবে। একজন বিনা বিচারে আটকে থাকবে এটা সরকারও চায় না। জামিন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না এটা ঠিক নয়। বিএনপি নেতাদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। একেকজন একেক কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মুখপাত্র। তিনি বললে সেটা দলের বক্তব্য।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশের চিকিৎসা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, পারিবারিকভাবে আবেদনটা করুক। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় কীভাবে সুপারিশ করে, তারপর বলা যাবে।
বিএনপি নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে তার খেসারত অনেকদিন দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।